ছাত্র সংগঠনের আতুড় ঘর থেকেই সরে দাঁড়ালেন রাবির ২ সমন্বয়ক
আপডেটঃ ৪:২৮ অপরাহ্ণ | মার্চ ০২, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
সংবাদ সম্মেলন করে নতুন ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ থেকে পদত্যাগ করলেন যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী সজিব ও যুগ্ম সদস্য সচিব সালাউদ্দিন আমমার। তারা দুজনেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক।,নতুনদের কাউকে দলের দায়িত্ব না নেয়ার পরামর্শ দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন দাবি করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেটের বাহিরে গিয়ে তাদের পক্ষে কোনো দল, গোষ্ঠী বা প্রেসার গ্রুপে নিজেদেরকে একীভূত করা যুক্তিযুক্ত হবে না। তাই আমরা আজ পদত্যাগ করলাম।
২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুরে রাবি ক্যাম্পাসের পরিবহণ মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই দুই সমন্বয়ক দাবি করেন, বিভাজন ও আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। জনগণের আকাঙ্খা এবং জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষিতে কাঙ্খিত বৈষম্যহীন ও আধিপত্য বিহীন বাংলাদেশ এখনও বাস্তবায়ন করা যায়নি। ফলে জুলাই অভ্যুত্থানের বিভিন্ন স্টেইকহোল্ডারসহ সর্বক্ষেত্রে বিভাজন লক্ষ্যণীয়। এ বিভাজনকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করে বৈষম্যহীন দেশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনার সালাউদ্দিন আমমার। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূলে ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধেই আন্দোলন; কিন্তু বৈষম্য যদি নতুন মোড়কে আধিবত্যবাদ বা আঞ্চিলিকতার মোড়কে ফিরে আসে তবে তা হবে দু:খজনক। এর বিরুদ্ধে আবারও সোচ্চার হতে হবে।
গত বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে নতুন ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারকে আহ্বায়ক এবং দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসানকে সদস্যসচিব করে প্রাথমিকভাবে ছয় সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি করা হয়।
পরের দিন বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলনে ২০৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। এতে ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মেহেদী সজীব এবং ১ নম্বর যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে সালাহউদ্দিন আম্মারের নাম ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরের দিন শুক্রবার পদত্যাগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই দুই সমন্বয়ক।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্রের জবাবে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলটা সর্বজনীন হতে পারত, কিন্তু তাদের বর্তমান অবস্থানের কারণে দলটার প্রতি শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস রাখতে পারছে না। আমাদের জুলাই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল শিক্ষার্থীরা। সেই শিক্ষার্থীদের পাল্সের বাইরে গিয়ে আমাদের রাজনীতি করা সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে আরেক প্রশ্নের জবাবে মেহেদী সজীব বলেন, ‘নতুন বন্দোবস্তের নামে ঢাকা ও ঢাবি কেন্দ্রিক নয়া ফ্যাসিবাদী মনোভাবের যে উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে তার প্রতিবাদেই আমরা এই প্লাটফর্মে থাকতে রাজি না।’
তিনি বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই আমি আজ মেহেদী সজীব হিসেবে গড়ে উঠতে পেরেছি। আমার স্পষ্ট বার্তা হলো, ঢাকা ও ঢাবি কেন্দ্রিক ফ্যাসিবাদী মনোভাব থেকে যতদিন না এই দলের অংশীজনরা বেরিয়ে আসতে পারবে, বিকেন্দ্রীকরণের দিকে মনোনিবেশ করবে, ততদিন অবধি আমি তাদের সাথে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় যাবো না। আর তাই আমি উক্ত পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’
IPCS News : Dhaka :