সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনাবৃষ্টি-রৌদ্র তাপে রাজশাহী অঞ্চলে পুড়ছে আউশ আবাদ, আমন নিয়েও শষ্কা

আপডেটঃ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ | জুলাই ২৫, ২০২৩

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:- আষাঢ় শেষ, শ্রাবণেরও সপ্তাহ পার।এই ভরা বর্ষা মৌসুমেও প্রচণ্ড খরতাপ ও পানির অভাবে আউশ আবাদ জমিতে দেখা দিয়েছে ফাটল, জমেছে আগাছা।এছাড়া পাট জাগ ও আমন চাষও ব্যহত হওয়ার আশষ্কায় দুচিন্তায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।অনেকেই বাড়তি খরচ করে স্যালো যন্ত্রের মাধ্যমে সেচ দিয়ে আমনের চারা রক্ষা করছেন।বর্ষাকালের আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণেী সপ্তাহ পার হলেও তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন চাষাবাদে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।রোপা আমন চাষাবাদের ভরা মৌসুমেও কৃষকেরা ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না।প্রখর রোদে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বীজতলা।আষাঢ়ের শেষে কিছুটা ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছিল।শ্রাবণ পড়তেই বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করে, ফলে ধিরে ধিরে বেশির ভাগ আউশের জমিতে জমে থাকা পানি শুকিয়ে গেছে।অনেক কৃষক আমনের বীজতলার সেচ দিয়ে চারা তৈরি করছেন।

বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের আমন বীজ তলাগুলো প্রখর রোদে হলুদ বর্ণ ধারণ করতে শুরু করেছে।অপরদিকে আউশ আবাদের পরিচর্যা করছেন কৃষকেরা।পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় আউশ আবাদে জমে গেছে আগাছা।পানির অভাবে প্রায় খেতে দেখা দিয়েছে ফাটল।কৃষকেরা বলছেন, মধ্য আষাঢ় থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত আমন ধানের চারা জমিতে রোপণ করা হয়।

কিন্তু এবার তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় তারা আমন চাষাবাদ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন।মূলত বর্ষাকালে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে কৃষকেরা রোপা আমন চাষ করে থাকেন।সাধারণত বীজতলায় তৈরি হওয়া চারা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগানো হয়।সরেজমিনে জেলার উপজেলার বিভিন্ন  বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানি না থাকায় বেশির ভাগ জমিই অনাবাদি পড়ে আছে।

গোদাগাড়ীর এলাকর কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, তার আউশ জমিতে পানি নেই।দুর থেকে পানি এনে ধান রোপণ করে ছিলেন।তারপর থেকে আর সেচ দিতে পারেননি।বৃষ্টির অপেক্ষায় এখন জমি শুকিয়ে ফাটল ধরেছে।পানি না থাকায় আগাছাতে ভরে গেছে পুরো খেত।আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ ও নিড়ানীতে এবার আউশ আবাদে বাড়তি খরচ গুনতে হবে।

দূর্গাপুরের কৃষক মোজাহার আলী বলেন, ১০ বিঘা জমি আমন আবাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন।বৃষ্টি হলেও রোপন শুরু হবে।তবে সব জমি শুকিয়ে গেছে তার।১০ কাঠার মতো আমন চারা রোপণ করেছেন।সে গুলো বাঁচাতে এখন প্রতিদিন সেচ দিচ্ছেন তিনি।তিনি আরো বলেন, এখন বর্ষাকাল।আগে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বৃষ্টিতে সব কিছু ভেসে যেত।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি দিনভর যে রোদ বাইরে, থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।পানির অভাবে একই অবস্থা জেলার সর্বত্রই।রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, এবার জেলায় প্রায় ৪৯ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান রোপণ করা হয়েছে।আর আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮২ হাজার হেক্টর জমিতে।

আউশ রোপণ শেষ হয়েছে।পহেলা জুলাই থেকে আমন চারা রোপণ শুরু করেছেন কৃষকেরা।তবে অনেক জমিতে পাট ও ভূট্টা থাকায় আমন চাষে একটু দেরি হচ্ছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, ইতিমধ্যেই আউশ আবাদ রোপণ শেষ হয়েছে।কৃষকেরা এখন খেত পরিচর্যা করছেন।বৃষ্টি না হওয়ায় একটু ভোগান্তি হচ্ছে।

বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের লক্ষামাত্রা নিয়ে শষ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে, মোজদার হোসেন আরও বলেন, সবেমাত্র আমন রোপণ শুরু হয়েছে।অনেক জায়গা চাষিরা সেচ দিয়ে আমন শুরু করেছেন।সময় ভেদে কিছু কিছু জমিতে পাট ও ভুট্টা থাকায় আমন আবাদ দেরি হচ্ছে।তবে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে না বলে আশা করছেন তারা।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।