শীতে বিপর্যস্ত রাজশাহী সহ উত্তরাঞ্চলের জন-জীবন
আপডেটঃ ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ | জানুয়ারি ২৯, ২০২২
নিউজ ডেস্কঃ
মাঘের কনকনে শীত আর হাওয়ায় কাঁপছে রাজশাহীসহ সমগ্র উত্তরাঞ্চল।এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।তাপমাত্রা আরও নেমে যাওয়ার শঙ্কা আছে।সব মিলিয়ে অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে উত্তরের জন-জীবন।শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহীতে ১১.১ ,রংপুরে ৮ .২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দেশের সর্বনিম্ন ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।আবহাওয়া অফিস বলেছে, রংপুর সহ উত্তরাঞ্চলে গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।এদিকে কুয়াশা আর জেঁকে বসা হিমেল হাওয়ায় জবুথবু জনজীবন।এরপরও বসে নেই দিনমজুর ও কৃষক-শ্রমিকরা।জীবিকার তাগিদে মাঠে নেমেছেন তারা।এছাড়া ছিন্নমূল মানুষরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।শীতের তীব্রতা আর শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে রাজশাহী মহানগরীতে মানুষের সমাগম কমে গেছে।কাজ ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ।কমে গেছে যানবাহন চলাচল।
হিমেল বাতাসে শীত যেন আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে মানুষসহ পশুপাখিকে।কুয়াশাও পড়ছে বৃষ্টির মতো।এই শীতে খেটে খাওয়া মানুষরা আছেন চরম বিপদে।২-৩ দিন ধরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এবং বিকেল ৪টার পর থেকে রাতভর ঘন কুয়াশা ঝরছে এ অঞ্চলে।রাত যতই গভীর হয়, কুয়াশার মাত্রাও ততই বাড়তে থাকে।
বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে থাকায় রাস্তায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে মারাত্মক ভাবে।বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা, ঘটছে প্রাণহানিও।সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার সাথে হিমেল বাতাসে খেটে খাওয়া মানুষ কাজকর্ম করতে পারছে না।নগরীতেও রিকশা-ভ্যান চালকরা একটু পর পর হোটেল কিংবা চায়ের দোকানে চুলার কাছে গিয়ে হাত শেকে নিচ্ছেন।
শিশু-বৃদ্ধরা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না।দিনভর ঘরের মধ্যে গায়ে কাঁথা-কম্বল জড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।খড়কুটো জালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন অনেকেই।নগরীর নওদা পাড়া এলাকার ফালু মিয়া প্রতিদিন সকাল হলেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হন।সারাদিন নগরের ভেতরেই রিকশা চালিয়ে সংসারের হাল ধরার মতো উপার্জন করেন তিনি।
শুক্রবার সকালে নগরীর ঘোড়া চত্বরে যাত্রী না পাওয়ার দীর্ঘক্ষণ চাতক পাখির মত বসে ছিলেন।তিনি বলেন, আজ খুব ঠান্ডা, মানুষজন নাই।ঠান্ডার জন্য ঠিকমতো গাড়িও চালানো যাচ্ছেনা।এমন আবহাওয়া থাকলে গরিব মানুষের জন্য সমস্যা।অপরদিকে শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
গত দুই দিনে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।অন্যান্য বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়লেও এ বছর শীত নেমেছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে।নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ থেকে মৃদুশৈত্য প্রবাহ শুরু হয়ে এখন তা অনেকটা মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
বিশেষ করে গত দু’দিন ধরে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশা এ অঞ্চলের মানুষকে কাহিল করে দিয়েছে।এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।এদিকে, রাজশাহীতে ক’দিন থেকে কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা।দিনের অধিকাংশ সময় সূর্য থাকছে ঘন কুয়াশার আড়ালে।ফলে দিনের সর্বচ্চো তাপমাত্রা ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে বেশি তফাৎ থাকছে না।
ফলে এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়ছেই।সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতার্ত মানুষের দুর্ভোগ।শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের ছিন্নমূল ও ভাসমান মানুষ।শীতার্তদের সহায়তায় এ অঞ্চলে সরকারি পর্যায়ে এখনও সেভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি।
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম ঢাকা আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে জানান, রাজশাহী-রংপুর সহ সমগ্র উত্তরাঞ্চলে চলছে সত্য প্রবাহ।
তিনি আরো জানান,শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহীতে ১১.০০ ,রংপুরে ৮ .২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দেশের সর্বনিম্ন ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী।