শীতের বার্তা উত্তরের জনপদে
আপডেটঃ ২:০৯ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ২১, ২০২৩
নিউজ ডেস্কঃ
দিনাজপুর:- ভোর থেকে শিশির ঝরা আর সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা গ্রামীণ আবহ।সূর্যের আলোক ছটা আর দ‚র্বাঘাসে জমাট বাঁধা মুক্ত দানা-স্নিগ্ধ সকাল আর প্রভাতের সোনা রোদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে হেমন্তকাল।এমন অপ‚র্ব দৃশ্য হিমালয়ের পাদদেশ ঘেঁষা বৃহত্তর দিনাজপুর তথা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরসহ উত্তরের জনপদে।ভোর থেকে টুপটাপ শব্দে ঝরছে শিশির বিন্দু আর দ‚র্বাঘাসে ডগায় মুক্তো দানার মতো জ্বল জ্বল করছে শিশির।শিশির বিন্দু যেন প্রকৃতির জমিনে টিপ পরিয়ে দিয়েছে।ভোর থেকে সকাল কুয়াশার আবহের গ্রামাঞ্চলের পথ-ঘাট।পাখির কলকাকলী আর সোনা মাখা রোদ যেন বলে দিচ্ছে হেমন্তের বার্তা।হেমন্তের স্নিগ্ধ সকাল প্রকৃতি জুড়ে সৃষ্টি করেছে নতুন আবহ।কুয়াশার চাদরে ঢাকা পথ-ঘাট, বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। ফসলের মাঠ সেজেছে নতুন সাজে।
দিগন্ত বিস্তৃত মাঠজুড়ে পাকা ধানের সোনালী আভা ছড়িয়ে দিচ্ছে আলো।দক্ষিণা বাতাস দোলা দিয়ে যাচ্ছে ধানের শীষে।এসময় ফসল ঘরে তুলতে বেড়ে যায় চাষিদের ব্যস্ততা।হেমন্তের ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই নবান্ন উৎসবের স‚চনা হয়।চোখ জুড়ানো এমন দৃশ্য-হিমালয়ের পাদদেশ ঘেঁষা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরসহ উত্তরের জনপদ।
দিনাজপুরের ১ নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের পশ্চিম শিবরামপুর গ্রামের মো: ইসমাইল হোসেন বলেন, সকালে পুরো এলাকা কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায়।রাতের প্রথম দিকে ফ্যান চালালেও মধ্যরাতের পর কম্বল গায়ে দিতে হচ্ছে।আর ভোর থেকে টিনের চালে টুস-টাস শব্দে শিশির বিন্দু পড়ছে এতেই বোঝা যায় শীত আসছে এই জেলায়।
হেমন্তের হাত ধরেই আসে শীত।তাই প্রকৃতিতেও ফুটে উঠেছে নানা বৈচিত্র্য।নানা রঙের ফুলে ফুলে ভরে গেছে এক অপরূপ সৌন্দর্যে।প্রকৃতি প্রেমী, শিশু-বৃদ্ধরাও এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পিছিয়ে নেই।সেই টানে ছুটে আসছেন অনেকেই।দিনাজপুর সদর উপজেলার গুচ্ছ গ্রামের মানুয়েল কিস্কু প্রকৃতিতে সবুজের সমারোহ করতে বাড়ির উঠানের চারপাশে বিভিন্ন ফুল ফলের গাছ রোপণ করেছেন।
এর মধ্যে রয়েছে শিউলী ফুল, বকুল ফুল, মালতি ফুলসহ নানা জাতের ফুলের গাছ।তারই লাগানো শিউলী ফুল গাছে ফুটেছে ফুল।আর তা দেখতে আর ফুলে ঘ্রাণ নিতে ছুটে আসছেন অনেকই।সকাল হলেই বিভিন্ন বয়সী মানুষ আসছে ফুল কুড়াতে।ওই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা প্রমীল্লা মূর্মূ জানান, সন্ধ্যার পর থেকে শিউলী ফুল ফোটে।সারা রাত এই ফুলের গাছ ফুলে ফুলে সাদা হয়ে যায়।
সকাল হলেই ফুল ঝড়ে যায়।শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সীরা আসে ফুল নিয়ে যায়।মালাও গাঁথে অনেকেই।কবি সাহিত্যিকরা বলছেন-জলবায়ু পরিবর্তনে দিন দিন নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে চির চেনা হেমন্ত।ভাটা পরেছে উৎসবেও।তাই ঐশ্বর্যের এই ঋতুকে ধারণ করে মনোজগতের চর্চা বাড়ানোর আহ্বান হাবিপ্রবির সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর হুদার।
তিনি বলেন, হেমন্ত প্রাচুর্যের আহ্বান মানুষের মনের মধ্যে ছড়িয়ে যায়।এই সময় আমরা সমৃদ্ধির মধ্যে ব্যকুল হয়ে উঠি।প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে মন-মানসিকতায় তারই প্রতিফলন ঘটানোরও আহ্বান জানান হাবিপ্রবির সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর হুদা।ষড় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ।
এই দেশে প্রতিটি ঋতুতেই হয় উৎসব।উৎসবকে ঘিরে ফিরে পায় বাঙ্গালী আনা।একে অপরের সেতু বন্ধন।তাই সব ঋতুতে আনন্দে উৎসবে মেতে উঠুক আমাদের শহর আর গ্রামাঞ্চল-এমন প্রত্যাশা সবার।
IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম : দিনাজপুর।