রবিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি: দিনাজপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে তহবিলের অপব্যবহার

আপডেটঃ ১২:৪৮ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ১৩, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

দিনাজপুর:- দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ঘুষ লেনদেনের কেলেঙ্কারির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।১২ জানুয়ারি ২০২৫, রোববার, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে অভিযান পরিচালনা করে দুদক এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়।বিকেলে অভিযান শেষে গণমাধ্যমের সামনে বিষয়টি তুলে ধরেন দুদকের দিনাজপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন।

দুদকের একটি দল সকাল ১১টায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে অভিযান শুরু করে, যা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।অভিযানে উপস্থিত ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক খায়রুল বাশার, ইসমাইল হোসেন এবং উপসহকারী পরিচালক আলম মিয়া।২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের একটি দল দেশের পাঁচটি শিক্ষা বোর্ডে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।এর মধ্যে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ১৪ থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলা নিরীক্ষার সময় অভিযোগ ওঠে, অডিটরদের সাড়ে ২১ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছে।দুদকের তদন্তে উঠে আসে, শুধু দিনাজপুর নয়, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডেও ঘুষ লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে।ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে ১০ লাখ টাকা এবং রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ৮ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়া হয়।সব মিলিয়ে ঘুষ লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৯ লাখ টাকায়।

দুদকের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন জানান, “পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি তদন্তের সূচনা হয়।অভিযানের সময় আমরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি।এছাড়া শিক্ষা বোর্ডের ক্রয় কার্যক্রম, সম্মানী বাবদ ব্যয়ের অনিয়মসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি সংগ্রহ করা হয়েছে।”অভিযানের সময় দুদকের দল নয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।অভিযানের পর দুদক কর্মকর্তারা জানান, তদন্তের অংশ হিসেবে যে নথি ও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করে দ্রুত কমিশনের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।কমিশন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

২০২৩ সালের অডিট কার্যক্রম চলাকালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ঘটে যাওয়া এই ঘুষ কেলেঙ্কারি দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় অনিয়ম ও দুর্নীতির নতুন একটি দিক উন্মোচন করেছে।প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এই ঘুষ লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে।তদন্তের ফলে আরও বড় কোনো অনিয়মের তথ্য সামনে আসার সম্ভাবনাও রয়েছে।স্থানীয়দের মতে, এই ধরনের দুর্নীতি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে।তারা এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা হতাশা প্রকাশ করেছে। তারা মনে করেন, শিক্ষার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে দুর্নীতির কোনো জায়গা নেই।শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।দুদকের এই অভিযানের মাধ্যমে শিক্ষা খাতের দুর্নীতি বন্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হয়েছে।তবে এ ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে ভবিষ্যতে নিয়মিত তদারকির পাশাপাশি দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম : দিনাজপুর।