রেলওয়ে গেটকিপারদের অনশনের ১০ দিনেও নেই দাবি মেনে নেওয়ার লক্ষণ
আপডেটঃ ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ | মার্চ ১০, ২০২২
নিউজ ডেস্কঃ
রেলওয়ের মানোন্নয়ন প্রকল্পের ১ হাজার ৮৮৯ জন গেটকিপার তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ী করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।মঙ্গলবার(৮ মার্চ) নবম দিনেও তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।তবে এখনও সমস্যার সমাধানে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন গেটকিপাররা।তারা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৮৮৯ জন গেটকিপার রাজস্বকরণ বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চল’ এর উদ্যোগে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।দীর্ঘ সময় অনশনের ফলে ইতোমধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং শতাধিক গেটকিপার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।তার মধ্যে কুষ্টিয়া সেকশনের তামান্না, সোহাগ, রোমান, কেওয়াটখালী সেকশনের কাউসার, নিজাম, রাব্বি, হোসেন আলী, সিলেট সেকশনের ফাতেমা আক্তার।
মনিরুল ইসলাম, কুলাউড়া সেকশনের সাজ্জাদ, টঙ্গির লাকী আক্তার, লিজা, ফেনীর হালিমা খাতুন, ফাতেমা আক্তার, কাওসার, রুবেল, যশোর সেকশনের চামেলি বেগম, সুমাইয়া, শ্রীমঙ্গলের আকুল মন্ডল, কাউছার আহম্মেদ অনিক, জামালপুরের কাকলি বেগম, লালমনিরহাটের হালিমা আক্তার, পলাশ, হাফিজ মিয়া, শায়েস্তাগঞ্জের ফরহাদ বারডেম হাসপাতাল, নিওরো সাইন্স হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মুগদা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।এছাড়া কুলাপাড়া সেকশনের গেটকিপার ফাতেমা আক্তার সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।বাকিদের অনশনস্থলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা ১০ জন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অনশনকারী গেটকিপারেরা বলছেন, ২১৬ ঘণ্টা ধরে কমলাপুরের খোলা আকাশের নিচে তারা অনশন চালিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয় অথবা বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসেনি।দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গেটকিপাররা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।অনশনের কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হলে তার দায় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে বলেও জানান আন্দোলনকারীরা।
কর্মসূচিতে গেইট কিপাররা বলেন, ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ রেলওয়ের মানোন্নয়ন প্রকল্পে ১ হাজার ৮৮৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ৫৫৫ জন রেলপোষ্য ও ৩২৫ জন নারী রয়েছেন।২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পে কর্মরত গেটকিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে চাকরি স্থায়ী করতে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন।
কিন্তু রেলপথ মন্ত্রণালয় এখনও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেয়নি।রেলপথ মন্ত্রণালয়ে অনেকবার স্মারকলিপি, চিঠি দিয়ে দুর্দশার কথা জানানো হলেও কোনো ফল আসেনি।আমরা রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বহুবার স্মারকলিপি দিয়েছি, চিঠি দিয়েছি, আমাদের দুর্দশার কথা জানিয়েছি।কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথায় কর্ণপাত করেনি।
তারা বলেন, নিয়োগের সময় তাদের বেতন নির্ধারণ করা হয় সর্বসাকুল্যে ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা।গত পাঁচ বছরে এ বেতন বাড়েনি।বর্তমান বাজারে বাসা ভাড়া, পরিবারের ভরণপোষণ, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।অন্যদিকে প্রায় সবার বয়স ৩২ বছর অতিক্রম করায় অন্য চাকরিতে যাওয়ারও সুযোগ নেই।
আন্দোলনকারীরা বলেন, চাকরির মেয়াদ প্রায় ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।তাই অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন— ঢাকা বিভাগের গেটকিপার সুজন আহমদ, মো. আল মামুন, কাওছার, মাহাবুব আলম মাফুল, আলফাহাজ, চট্টগ্রাম বিভাগের জাবেদুল হক, মো. মাসুদুল ইসলাম, পাকশি বিভাগের রূপা পারভীন, কাজী পিয়াশ, সোহেল, ছোটন,শাহীন রেজা প্রমুখ।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী।