**রাসিক নির্বাচনের টুকিটাকি** বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়ে আবারও মেয়র নির্বাচিত হলেন লিটন
আপডেটঃ ৮:২৪ অপরাহ্ণ | জুন ২২, ২০২৩
নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:- রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে আবারও নির্বাচিত হয়েছেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।বুধবার (২১ জুন) দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল থেকে এই তথ্য জানা গেছে।প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফল:- সিটির ১৫৫ টির মধ্যে সবকটি কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফলে ১ লাখ ৬০হাজার ২৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৩ হাজার হাজার ৪৮৩ ভোট।এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন পেয়েছেন ১০ হাজার ২৭২ ও জাকের পার্টির প্রার্থী গোলাপফুল প্রতীক ১১ হাজার ৭১৩ভোট।এই নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ।প্রসঙ্গত, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর রাজশাহী সিটিতে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুরশিদ আলম (হাতপাখা) নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন।
২১ জুন বুধবার সকাল ৮টা থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।এই সিটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন।নির্বাচনে মোট ১৫৫টি কেন্দ্রের সব গুলোতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটকেন্দ্র গুলোতে স্থাপন করা হয় ১ হাজার ৫৬০টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা।
ঢাকায় বসে সিসি ক্যামেরায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) কমিশনের সদস্যরা।ভোটগ্রহণ শেষে বুধবার বিকেলে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।বুধবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে।’
ভোটে জিতে টানা দুবার এবং সব মিলে তিনবার মেয়রের চেয়ারে বসছেন খায়রুজ্জামান লিটন।এরআগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয় পান লিটন।তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী বুলবুল।লিটন নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬ ভোট।আর বিএনপির মোসাদ্দেক হেসেন বুলবুল ধানের শীষ প্রতীকে পান ৭৭ হাজার ৭০০ ভোট।ভোট পড়েছিল ৭৮. ৮৬ শতাংশ।
এরআগে ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী বুলবুলের ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোটের বিপরীতে খায়রুজ্জামান লিটন ৯৮ হাজার ৩৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।তবে এবার শক্ত প্রতিদ্বন্বদী না থাকায় শুরু থেকেই নির্বাচন ছিল অনেকটাই নিরুত্তাপ।মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন চার জন।
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম (হাতপাখা) ও জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)।তবে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী নির্বাচন বয়কট করেছেন।
খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইসলামী আন্দোলন ভোট বর্জন করায় অনেকটা নির্ভার ছিলেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন।তবে শেষ পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি বাড়ে।উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৫২ শতাংশ ভোট পড়ে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
★★ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও নারী সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখা:-এবার ২৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১১ জন।একটি ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।এ ছাড়া ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী পদে রয়েছেন ৪৬ জন প্রার্থী।এখানে ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন।এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ছয়জন।তৃতীয় লিঙ্গের একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীও রয়েছেন।
★★রাজশাহীর ৩০ ওয়ার্ডের ২২টিতে আ.লীগের জয়:-রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডের ২৩টিতেই পুরোনো কাউন্সিলররা জয়ী হয়েছেন।আর জয়ী কাউন্সিলদের মধ্যে ২২ জনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা।ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে জয়ী হয়েছেন একজন ও বিএনপির ৫ জন।এছাড়াও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউন্সিলর পদে জয়ী হয়েছেন।
তাদের একজন বিএনপির পরিবারের সদস্য ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আকতারুজ্জামান।তিনি দলে সক্রিয় নন।আরেকজন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য শহিদুল ইসলাম।বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে চলাফেরা করেন।নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে বিএনপি থেকে যাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছিল, সেই তালিকায় শহিদুল ইসলামের নাম ছিল না।
অপরদিকে, বিএনপির বহিষ্কৃত ১১ নেতাকর্মীর মধ্যেও ৫ জন কাউন্সিলর পদে জিতেছেন।তবে জামায়াতের সাতজন কাউন্সিলর প্রার্থীর সবাই হেরে গেছেন।বুধবার রাতে শিল্পকলা একাডেমি থেকে রিটানিং অফিসার বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।
★★নতুন ৭ মুখ:-এবার নতুন যে সাতজন কাউন্সিলর পদে জয়ী হয়েছেন, তাঁরা হলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বাবু, বোয়ালিয়া থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আলিফ আল মাহমুদ ওরফে লুকেন।তিনি তার চাচা টানা চার বারের বর্তমান কাউন্সিলর তরিকুল আলমকে হারিয়েছেন।
৩০ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন প্রার্থী হিসেবে জিতেছেন নগরের মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন।তিনি আওয়ামী লীগের বর্তমান কাউন্সিলরকে পরাজিত করেছেন।২৯ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহের হোসেন সুজা, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ কর্মী মনিরুজ্জামান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আওয়ামী লীগের নেতা জানে আলম ওরফে জনী ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা আবু বক্কর ওরফে কিনু।
★★আলোচিত দুই ওয়ার্ড:-এবার নির্বাচনে দুটি ওয়ার্ড আলোচিত ছিল।এর একটি ১৯ নম্বর ওয়ার্ড।এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল হক ওরফে সুমন।তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ হোসেন।এই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ছুরিকাঘাতের ঘটনা, মোটরসাইকেল ও কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়।
এর পর থেকে ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ মোতায়েন ছিল।আলোচিত অন্যটি হচ্ছে ৭ নম্বর ওয়ার্ড।এই ওয়ার্ডের প্রার্থী ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির অঙ্গসংগঠন যুব মৈত্রীর নেতা মতিউর রহমান।তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সমর্থক জহিরুল ইসলাম।এই জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মতিউর রহমান আচরণবিধি ভঙ্গের একাধিক অভিযোগ করেছেন।
নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছিলেন।এরপরও মতিউর রহমানের মিছিলে ককটেল হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।পাল্টা অভিযোগ এনে জহিরুল ইসলাম থানা ঘেরাও করেছিলেন।এ নিয়ে ওই ওয়ার্ডে ব্যাপক উত্তেজনা ছিল।তৎপর ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
★★আওয়ামী লীগের পূনোর নির্বাচিত কাউন্সিলর যাঁরাঃ এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বর্তমান কাউন্সিলর যাঁরা এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বর্তমান কাউন্সিলর যাঁরা হয়েছেন, তাঁরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে রজব আলী, ২ নম্বর ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কামাল হোসেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কামরুজ্জামান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নূরুজ্জামান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে রাসেল জামান, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে আব্বাস আলী সরদার, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সরিফুল ইসলাম, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুল মমিন, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে শাহাদাত আলী, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে রবিউল ইসলাম (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত), ২১ নম্বর ওয়ার্ডে নিযাম উল আযীম, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুল হামিদ সরকার, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে মাহতাব হোসেন চৌধুরী ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আরমান আলী।
★★ বিএনপির ওয়ার্ড কাউন্সিলর যাঁরা:-বিএনপির ওয়ার্ড কাউন্সিলর যাঁরাপুনর্নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা হলেন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির নেতা আবদুস সোবহান ওরফে লিটন, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক যুবদল নেতা বেলাল আহম্মেদ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির নেতা আশর।
★★বাবা-মায়ের সমাধিতে লিটনের শ্রদ্ধা:-রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় পিতা জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান ও মাতা জাহানারা জামানের সামাধীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেছেন সদ্য নির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে মহানগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় শহীদ কামারুজ্জামান ও জাহানারা জামানের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ দেওয়া হয়।এই সময় খায়রুজ্জামানের সহধর্মীনি বিশিষ্ট সমাজসেবী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহিন আকতার রেনীসহ মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পুষ্পার্ঘ অর্পণ শেষে দোয়া করা হয়।পরে সাংবাদিকদের প্রশ্ন উত্তরে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিপুল ভোটে জনগণ আমাদের নির্বাচিত করেছে এজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।জনগনের তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন, আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও ছেলে মেয়েদের কর্মসংস্থানের জন্য নির্বাচিত করেছেন।আমি আমার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলে এই রাজশাহীতে শিল্প কারখানা গড়ে তোলার অনুরোধ জানাবো।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের নির্বাচনের অংশ গ্রহণ করার বিষয়ে বলেন, আমাদের দল কেন্দ্রীয় ভাবে চেষ্টা করেছে সব দলের অংশ গ্রহনের নির্বাচন করার।এমনিতেই সকলের অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরী হয়ে আছে বা আগামীতে আরো করবে।আরো কিছু যদি দাবি মানতে হয় সেটা করে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে।
সেই কাজের সহায়ক শক্তি হিসেবে নিজে কাজ করবে বলে জানান।এদিকে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদিেেয় জনসাধারণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত হন।
★★বিজয়ী প্রার্থীর বাড়ীতে হামলা:- রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত এক কাউন্সিলর প্রার্থী বিজয়ী প্রার্থীর দুই সমর্থকের বাড়িতে হামলা এবং সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ওয়ার্ড কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে।বিজয়ী প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর ও বিএনপির সাবেক নেতা।
বিজয়ী প্রার্থীর নাম আবদুস সোবহান লিটন।সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তিনি।তিনি শাহ মখদুম থানা বিএনপির সাবেক সহসম্পাদক।দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভোটে অংশ নেওয়ায় সম্প্রতি তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।অভিযুক্ত পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম মোস্তাফিজুর রহমান পরশ।
তিনি নগরের বোয়ালিয়া থানা (পশ্চিম) আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে এ তাণ্ডব চালানো হয়।বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবদুস সোবহান টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে ২ হাজার ২৫৮ ভোট পেয়ে আবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজুর রহমান পরশ ঠেলাগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৩৮ ভোট।১২০ ভোটে তিনি পরাজিত হন।আবদুস সোবহান বলেন, কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল দেখে মোস্তাফিজুর দুই ঘণ্টা ফলাফল আটকে রাখেন।তিনি ফল পরিবর্তনের চেষ্টা করেন।না পেরে কেন্দ্র থেকে ফেরার পথে মোস্তাফিজুর তাঁর কর্মীদের নিয়ে প্রথমে উজ্জ্বল নামের তাঁর এক সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালান।
ওই বাড়িতে হামলার পর নগরের দড়িখড়বোনা মোড়ে সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।এরপর দড়িখড়বোনা এলাকায় এনামুল হক নামের আরেক সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।ঘটনার পর দড়িখড়বোনা এলাকায় সিটি করপোরেশনের এই ওয়ার্ড কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দায় একটি ভাঙা প্লাস্টিকের চেয়ার পড়ে আছে।
কার্যালয়ের কাঠের দরজা ভাঙা।ঘরের ভেতরে চেয়ার, টেবিল ও কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।এর ভেতর থেকে পোড়ার গন্ধ বের হচ্ছে।কার্যালয়টির সাইনবোর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।সোবহান বলেন, এটা সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ওয়ার্ড কার্যালয়।স্থায়ী কার্যালয় আরেকটি আছে।এলাকার মানুষের সুবিধায় ২০১০ সালে কার্যালয়টি করা হয়েছে।
এর ভাড়াও দেয় সিটি করপোরেশন।সরকারি অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ব্যাপারে তিনি মামলা করবেন।নিরাপত্তার অভাবে রাতে থানায় যেতে পারিনি।এমনকি বিজয়ের পরে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে একটা বিজয় মিছিলও বের করতে পারেননি।পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান পরশকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোনের সংযোগ পাওয়া যায়নি।
তবে বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কেই অভিযোগ করেনি।অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।