রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের র্যাম্পের মূখে গাড়ী পার্কিং,নাই হুইল চেয়ার
আপডেটঃ ১২:১৭ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ০৮, ২০২২
নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:- রাজশাহী রেল স্টেশনে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য নির্মিত র্যাম্পের(যাওয়া আসার বিশেষ রাস্তা) মূখে পার্কিং করা হচ্ছে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার, এমনকি খোদ রেলের কর্মকর্তাদের বহনকারী গাড়ী।যার কারনে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের কষ্ট করে সিঁড়ি বেয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে ওঠানামা করতে হয়।রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে প্রতিবন্ধীব্যক্তিদের জন্য তৈরি র্যাম্পটিতে (ঢালুপথ) মোটরসাইকেল গাড়ী পার্কিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় প্রতিবন্ধী যাত্রীদের সিঁড়ি বেয়ে স্টেশন প্লাফর্মে ওঠানাম করতে হচ্ছে।এ ছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধী ট্রেন যাত্রীদের জন্য ৩টি হুইল চেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেগুলোর খোঁজ মিলছে না।আবার টাকা দিলে দেখা মিলে হুইল চেয়ারের।বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনটি পশ্চিম রেল ভবনের সন্নিকটের হওয়ায়, মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বেশির ভাগ সময়ে স্টেশনে আসেন তদারকিতে।তিনি প্রতিবন্ধীদের চলাচলের জন্যতৈরী র্যাম্পটি ও হুইল চেয়ারের দিকটিতে নজর নাই তার।অথচ তিনি যাত্রী সেবার মান বাড়াতে তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ছবি ও লেখা পোস্ট করেন নিজের আইডিতে।
রাজশাহী কোট এলাকার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মিলন ইসলাম (২৮) বলেন, গত ৮ বছর ধরে আমি রাজশাহী ঢাকা ট্রেনে যাতায়াত করি কিন্তু কোনোদিন স্টেশন প্লাটফর্মে র্যাম্প ব্যবহারের সুযোগ পাইনি।শুধু শুনেছি রাজশাহীরেল স্টেশনে র্যাম্প রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু রেলওয়ে স্টেশনের র্যাম্পটির মূখে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার পার্কিং করা হয়, সেজন্য আমাকে কষ্ট করে সিঁড়ি বেয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে ওঠানামা করতে হয়।এ সময় অন্য যাত্রীদের সহযোগিতা নিতে হয়।লক্ষিপুর এলাকার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আতিয়ার রহমান জানান, তিনি প্রায়ই ট্রেনে রাজশাহী থেকে ঈশ্বরদী যাতায়াত করেন কিন্তু প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্মিত র্যাম্পটি ব্যবহারের সুযোগ পাননি।
হেতমখাঁ এলাকার প্রতিবন্ধী মানিক বলেন, শুনেছি প্রতিবন্ধী ট্রেনযাত্রীদের জন্য নির্মিত র্যাম্পটি ব্যবহার করা যায়না।তাই সিঁড়ি বেয়ে স্টেশন প্লাটপর্মে ওঠানামা করতে খুব কষ্ট হয়।তানোরের ‘প্রতিবন্ধী আক্কাশে আলী বলেন, যাত্রীদের জন্য তৈরি র্যাম্পে শুধু মোটরসাইকেল রাখা হয়।এজন্য তাকে কষ্ট করে সিঁড়ি বেয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে ওঠানামা করতে হয়।
আমি হুইল চেয়ারের কথা শুনেছি কিন্তু তা কোনোদিন দেখিনি।রাজশাহী রেলওয়ে রি-মডেলিংস্টেশনের বিল্ডিং নির্মাণ শেষে ২০০৬ সালে উদ্বোধন করা হয়।সে সময় স্টেশন প্লাটফর্মের প্রধান প্রবেশ পথের উত্তর প্রান্তে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য র্যাম্পটি নির্মিত হয়।এ ছাড়া শারিরীক প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হুইল চেয়ার ও রোগী বহনের জন্য স্ট্রেচার।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম বলেন, প্রতিবন্ধী যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য নির্মিত র্যাম্পটিতে উঠার পথে মোটরসাইকেল পার্কিং করার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি বলেন, কিছু রেলওয়ে স্টাফ ও আগন্তুক র্যাম্পে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার পার্কিং করেন।এ ব্যাপারে নো পার্কিং সাইনবোর্ড সহ সতর্ক করার পরও তারা কথা শুনছেন না।
এ ছাড়া স্টেশনের প্রবেশ দারে নিরাপত্তা প্রহরীর সদস্যরা তার দেখভালের জন্য রাখা হয়েছে।কিন্তু তাদের কথা কেউ শুনেনা।সম্প্রতি নো পার্কিং যায়গায় গাড়ী রাখতে নিষেধ করায় চড়াও হয়ে তাদের উপর।পশ্চিমরেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, প্রতিবন্ধী যাত্রীদের র্যাম্পে মোটরসাইকেল পার্কিং করার বিষয়টি তিনি নিজের চোখে দেখেছেন।
তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি।তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।প্রতিবন্ধী যাত্রীরা যাতে র্যাম্পটি ব্যবহার করতে পারেন, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বরাদ্দ দেওয়া হুইল চেয়ারগুলো ব্যবহার উপযোগী করা হবে।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।