সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

রাজশাহীর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনায় মৃত্যুর হিসাবে গরমিল

আপডেটঃ ৮:৩২ অপরাহ্ণ | আগস্ট ২৯, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী প্রতিনিধি:-রাজশাহীতে করোনায় মারা যাওয়া রোগীর হিসাব সংরক্ষণে চরম অবহেলা করা হচ্ছে।রাজশাহীর সিভিল সার্জনের কার্যালয় নানরকম গরমিলে ভরা হিসাব প্রতিদিন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ে পাঠাচ্ছে।তারপর সে প্রতিবেদন যাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।ফলে রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতির বাস্তব চিত্র সরকারের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী জেলার বাসিন্দা মারা গেছেন।অথচ সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের প্রতিবেদনে সে তথ্য আসছে না।করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরু থেকেই সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের প্রতিদিনের প্রতিবেদনে এমন গরমিল দেখা যাচ্ছে।বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা.হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, জেলার আট জেলায় সিভিল সার্জনের কার্যালয় যে হিসাব দেয় সেটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়।আবার সব বিভাগীয় কার্যালয়ের প্রতিবেদন নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন করোনা পরিস্থিতি উপস্থাপন করে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় ভুল তথ্য দিলে সেটা সবখানেই ভুল হিসেবে থাকবে।রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টার আগের চিত্র প্রতিবেদন আকারে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠায়।অথচ সিভিল সার্জনের কার্যালয় সে প্রতিবেদন গ্রহণ না করে তার আগের দিন অর্থাৎ দুই দিন আগের হিসাবকে ‘গত ২৪ ঘণ্টার’ করোনা পরিস্থিতি বলে চালিয়ে দিচ্ছে।

রামেক হাসপাতাল ও সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের গত কয়েকদিনের প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে এসব চিত্র দেখা গেছে।গত ২৩ আগস্ট সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২২ আগস্ট সকাল থেকে ২৩ আগস্ট সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে চারজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।রামেক হাসপাতালে এখন ২৪০ জন রোগী ভর্তি আছেন।অথচ রামেক হাসপাতালের এই তথ্যটি ২১ আগস্ট সকাল থেকে ২২ আগস্ট সকাল পর্যন্ত সময়ের।

অর্থাৎ পুরনো রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়।সিভিল সার্জনের কার্যালয় সেদিন উল্লেখ করে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৮৯ জন।২৪ আগস্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজশাহীর আরও একজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।অথচ এই হিসাব সিভিল সার্জনের কার্যালয় অন্তর্ভুক্ত করে আরও একদিন পর।২৫ আগস্ট সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের প্রতিবেদনে মৃত্যুর সংখ্যা একজন বাড়িয়ে ২৯০ করা হয়।

এরপর সবশেষ শনিবার সকালে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের প্রতিবেদনেও মৃত্যুর সংখ্যা আর বাড়েনি।অথচ রামেক হাসপাতালের প্রতিবেদন বলছে, ২৬ আগস্ট সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীর একজন করোনা পজিটিভ অবস্থায় মারা গেছে।২৭ আগস্ট সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও দুজন।অর্থাৎ রাজশাহীর এই ৩ জনের মৃত্যুর হিসাব সংরক্ষণ করেনি সিভিল সার্জনের কার্যালয়।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, আমাদের এখানে কোন জেলার কতজন মারা গেছেন, কতজন করোনা পজিটিভ অবস্থায়, কতজন নেগেটিভ কিংবা উপসর্গ নিয়ে কোভিড ইউনিটে মারা গেছেন তা স্পষ্ট করেই লেখা থাকে।এই প্রতিবেদনই সিভিল সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়।সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার ফোন না ধরার কারণে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে তাঁর কার্যালয়ের পরিসংখ্যানবিদ নয়ন কুমারের বক্তব্য পাওয়া গেছে।তিনিই প্রতিদিন করোনা পরিস্থিতি হালনাগাদ করেন।মৃত্যুর হিসাবে গরমিল নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন কারণে ভুল হতে পারে।আর রামেক হাসপাতালের প্রতিবেদন একদিন পর তাঁরা হালনাগাদ করেন বলে স্বীকার করেন।এতে ৪৮ ঘণ্টা আগের পরিস্থিতি সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার হিসেবে পাঠানো হয় বলেও স্বীকার করেন নয়ন কুমার

IPCS News Report : Dhaka: