রাজশাহীতে সরগম ইফতার রাজনীতি

আপডেটঃ ৫:২৮ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৫, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:- করোনা ভাইরাস মহা-মারির কারণে গত দুই বছর দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড এক প্রকার বন্ধ ছিল।কিন্তু করোনার প্রকোপ কেটে যাওয়ায় দেশে আবার রাজনৈতিক কর্ম-কাণ্ডে নেতারা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে ইফতার রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠেছে।বিশেষ করে আওয়ামী লীগের এমপি ও মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং বিএনপি নেতাদের তোড়জোড় শুরু হয়েছে।ইফতার ঘিরে নেতারা দলীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মত-বিনিময় ও আলোচনা সভা করছেন।এছাড়া রাজশাহীতে সব ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড আবার শুরু হয়েছে।এখন ইফতার আয়োজনের মাধ্যমে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে বড় রাজনৈতিক দলের নেতারা তৎপর হয়ে উঠেছেন।বিশেষকরে  ইফতার ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে তারা মতবিনিময় ও আলোচনা করছেন।

আগামী বছরের মাঝামাঝি রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং আগামী বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখেই মূলত ইফতারের অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মঞ্চ।এছাড়া বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ইফতার আয়োজনেও সব শ্রেণির মানুষের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।

জানা গেছে, এ বছর রোজার প্রথম দিন থেকে পথচারী ও এলাকা বাসীর মাঝে ইফতার বিতরণ করছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।ইফতারের আগে আলোচনা ও মত-বিনিময় অনুষ্ঠানও করছেন।ডাবলু সরকার বলেন, আমরা সারা বছর মানুষের জন্য কাজ করি।রোজার মাসেও তাদের পাশে দাঁড়ানোর মনসিকতা থেকেই প্রতিদিন ইফতার বিতরণ করছি।

ইফতারের আগে নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সঙ্গে মত-বিনিময়ও করছি।এতে এলাকার মানুষ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগটা বাড়ছে।আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ডাবলু সরকার একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী।অনেক আগে থেকে তিনি গণ-সংযোগ করছেন।রোজার মাসে একেক দিন একেক এলাকায় গিয়ে তিনি ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন।

গত ১১ এপ্রিল রাজশাহী জেলা পুলিশের ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহীর সব আসনের সংসদ সদস্য (এমপি)।পরদিন রাজশাহী মহানগর পুলিশের ইফতার অনুষ্ঠানেও জেলার সব এমপি, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।এ সব অনুষ্ঠানে তারা পরস্পরের সঙ্গে ভাব বিনিময় করেন।

এ সব অনুষ্ঠানেও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে বক্তব্যও দিচ্ছেন।গত ২১ এপ্রিল মোহনপুরে জমকালো ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারার আয়োজনে ইফতার মাহফিলে ,রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েনউদ্দিন অংশ নেন।ইফতার পূর্ব আলোচনায় নেতারা আগামী সকল নির্বাচনে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান।২২ এপ্রিল রাজশাহী মহানগরীতে আলোচনা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ।

এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।এভাবে প্রতিদিনই প্রতিটি উপজেলার কোথাও না কোথাও ইফতারের আয়োজন করছেন রাজনৈতিক নেতারা।এতে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকছেন।ইফতার অনুষ্ঠান হলেও এসব আয়োজনে রাজনৈতিক মতবিনিময় সভায় রূপ নিচ্ছে।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আমাদে বড় পরিসরে বসার সুযোগ হয়নি।তাই এবার ইফতার অনুষ্ঠানগুলোতে খোলামেলা কথা বলা ও মত-বিনিময়ের সুযোগ হচ্ছে।এবং এ অনুষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক আলাপ আলোচনার মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে।

ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান হলেও ইফতার অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অনুষ্ঠান।আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপির নেতারাও বসে নাই।তারাও ইফতারের আয়োজন করছেন।এর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সঙ্গে তারাও যোগাযোগ বাড়িয়েছেন।১৫ এপ্রিল বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু রাজশাহীতে নগর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

পরদিন ১৬ এপ্রিল তিনি চাঁপাই-নবাবগঞ্জ জেলা বিএনপি ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন।এছাড়াও ২৩ এপ্রিল শনিবার নাটোরের একটি ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন এই বিএনপি নেতা।বিএনপি নেতা দুলু বলেন, ইফতারের মতো সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান গুলোতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ছাড়াও কথা বলার সুযোগ হচ্ছে।

তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও এর মধ্যদিয়ে উজ্জীবিত হচ্ছেন।তিনি আরও বলেন, রোজার মাসই তিনি রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় দলীয়ভাবে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠান গুলোতে যাবেন।নওগাঁর নিজ নির্বাচনি এলাকা নিয়ামতপুরে ইফতার আয়োজনে অংশ নেন, খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার।

২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার শ্রীমন্তপুর হাইস্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ ইফতারের আয়োজন করে।ইফতারের আগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে নৌকায় ভোট দেওয়ার বিকল্প নেই।জনগণকে এটাই বোঝাতে হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল প্রতিদিনই উপজেলার কোথাও না কোথাও দলীয় ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।শিমুল বলেন, চিকিৎসক হিসাবে আমি সারা বছরই নির্বাচনি এলাকায় থাকি।এখন করোনামুক্ত পরিবেশে আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠান গুলোতে থাকছি।এতে করে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ছে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ রাজশাহী।