রাজশাহীতে মাদকের ছড়াছড়ি
আপডেটঃ ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ | নভেম্বর ২৫, ২০২৪
নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী :- ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় রাজশহীকে মাদক পাচারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকে মাদক ব্যবসায়ীরা। ভারত-রাজশাহীর মধ্যে পদ্মানদী ও দূর্গমচরের জন্যই নিরাপদ মাদক পাচারের নিরাপদ রুট এই জেলা। মাদক ব্যবসায়ীরা দুই পারের সীমান্ত রক্ষিদের চোখ ফাকি দিয়ে প্রতিনিয়ত কৌশল পরিবর্তন করে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের রমরমা বানিজ্য। তারা সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীতে মাছ ধরার অজুহাতে ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে সহজে মাদক বহন করে আনছে বাংলাদেশে।
শিক্ষার্থীদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন থেকে অদ্যবধি (জুলাই থেকে নভেম্বর) গত ছয় মাসে পুলিশের তেমন কর্মতৎপরতা না থাকায় জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা গুলোতে আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদকের চোরাচালান। বিশেষ করে গোদাগাড়ী, চারঘার, বাঘা উপজেলা ও রাজশাহী সদর পদ্মানদী তীরবর্তী হওয়ায় এই অঞ্চলের প্রায় পাড়ায়, মহল্লায় নির্বিঘ্নে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক।
চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়ন, চারঘাট পৌরসভা ও চারঘাট ইউনিয়নের প্রায় ১৮ কিমি এলাকা পদ্মার তীরেঘেষা ও ভারত সীমানায়।
প্রায় পানিতে ঘেরা ও উন্মুক্ত সীমানার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বিভিন্ন প্রকার মাদক দেশের অভ্যন্তরে ঢুকছে। মাদক ব্যবসায়ীর রাতের আঁধারে পানি সাঁতরিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ে এসে বিভিন্ন গ্রামে নিরাপদ স্থানে মজুদ করে।পরে সময় সুযোগ বুঝে দেশের অভান্তরীন জেলাগুলোতে পাঠিয়ে দেন। এছাড়া স্থানীয় মাদক বিক্রেতারা এসব মাদক পাচারের কাজে ব্যবহার করে থাকে দরিদ্র অসহায় নারী, স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী,ভিক্ষুক ও দিন ভুক্ত লেবারদের।স্থানীয়রা বলছেন, স্থানীয় রাজনৈতিক কিছু পাতিনেতা, কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধি, অসাধু পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে গোপনে মাদক ব্যবসায়ীদেরকে সহযোগীতা কছেন। যার ফলে এলাকায় বন্ধ হচ্ছে না মাদক বানিজ্য।
অভিযোগ রয়েছে মাদক ব্যবসায়ীরা অর্থের বিনিময়ে ডিঙ্গি নৌকা ব্যবহারকারী জেলেদের ব্যবহার করে ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক নিয়ে আসে। এসকল মাদক ব্যবসায়ীরা খুচরা ব্যবসার জন্য গ্রামের ছোট ছোট টং দোকান ব্যবহার করে। এছাড়া মাদক বহনে প্রশাষনের চোখ ফাঁকি দিয়ে, মাদক সরবরাহে ছদ্মবেশি ছাত্র, ভিক্ষুক ও প্রতিবন্ধীর বেশধরে অভিনব কায়দায় একস্থান থেকে অন্যস্থানে বহন করে থাকে।
সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, রাওথা, পিরোজপুর ডালিপাড়া, গোপালপুর, মোক্তারপুর, গৌরশহড়পুর, ইউসুফপুর, টাঙ্গন, শলুয়ার হলিাদাগাছী স্টেশন, নন্দনগাছী স্টেশন, পুঠিমারী এলাকা মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিস্কৃয়তার সুযোগে এক শ্রেণীর মাদক ব্যবসায়ী গডফাদারররা হয়ে উঠেছেন বেপরোয়া এবং বেপরোয়া ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা। এসব মাদক ব্যবসায়ীদের চিহিৃত করে আইনের কঠোর ব্যবস্থা না নিলে মাদক বন্ধ করা কঠিন বলে মনে করেন সীমান্তবর্তী এলাকার একাধিক ব্যাক্তি। চারঘাট নৌপুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ হুমায়ুন কবীর এই প্রতিবেদক কে বলেন মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি, মডেল থানা, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন বোর্ড ও নৌপুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করছে। নদীপথে টহল জোড়দার করে মাদক চোরাচালান রোধ করা চেষ্ট করছেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে চারঘাট মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল খালেক বলেন, ৫ আগষ্ট এর পর পুলিশ বাহিনীতে একটু ছন্দপতন হয়েছিল কথাটি সঠিক। আর এই সুযোগে কিছু মাদক ব্যবসায়ী সুযোগ নিয়ে অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। তবে পুলিশ এখন আগের চেয়ে অনেক সক্রিয়। যার প্রমান কয়েক মাসে বিপুল পরিমানের ফেন্সিডিল ও গাজা আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। মাদকের সঙ্গে কোন আপোষ নেই।একই বক্তব্য সীমান্তের সকল থানার ইনচার্জ দের।তবে তারা বলছেন,মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরন করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, গডফাদার সিন্ডিকেট হোক আর যেই হোক মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের চিহিৃত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ: রাজশাহী।