রাজশাহীতে অভ্যান্তরিন দ্বন্দে বিভক্ত বিএনপি
আপডেটঃ ৮:৪৬ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ০৪, ২০২৩
নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:- সরকার পতনের একদফা দাবিতে এবার চূড়ান্ত ধাপের আন্দোলনে হার্ডলাইনে বিএনপি।অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে সেই আন্দোলন।এরই মধ্যে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।কিন্তু রাজশাহীতে বিএনপির অন্তরদ্বন্দে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের প্রস্তুতির তেমন জোরালো ভূমিকায় আসতে পারছেনা।ফলে রাজশাহী বিএনপি এখনো অগোছালো।একই অবস্থা দলটির অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠন গুলোতেও।মঞ্চে ওঠা এবং সামনে পিছনে দাঁড়ানো,মিছিলের অগ্রভাগে থাকা নিয়েও প্রতিটি প্রগ্রামে মারামারি কোটছেন তারা।রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রায় চার মাস ধরে কারাগারে।২০১৯ সালের ৫ জুলাই তিন মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি করা হলেও ইতোমধ্যেই চার বছর পার হয়ে গেছে।এ নিয়ে জেলার নেতাদের মধ্যে রয়েছে চরম অসন্তস।
জেলার আহ্বায়কের মত গুরুত্ব পূর্ন এই পদে শুরু থেকেই আবু সাঈদ চাঁদকে মেনে নিতে পারেনি অনেকেই।এছাড়াও সভা সমাবেসে তার বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কথাবার্তা ও কর্মকান্ড নিয়ে বিব্রত দলের সিনিয়র নেতারা।ফলে জেলার নেতারা পৃথকভাবে পালন করে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি।
অপরদিকে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে রাজশাহী মহানগরের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠেছিল।নিজেদের মধ্যে মারামারি, নতুন কমিটির সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছিল।তার পর থেকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিও পৃথকভাবে পালন করা হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান (মিনু), সাবেক মেয়র ও কেন্দ্রীয় নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, শফিকুল হক মিলন, নাদিম মোস্তাফা এবং তোফাজ্জাল হোসেন তপুর একসময় দলের মধ্যে ও এলাকায় দোর্দণ্ড প্রতাপ ছিল।তাঁদের মতামত উপেক্ষা করে অযোগ্য ও আনকোরা নেতাদের হাতে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে।
এাছাড়া তৃনমূল থেকে উঠে আসা পরিক্ষিতদেরও কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়নি।এ নিয়েও রয়েছে অভ্যন্তরিন ক্ষোভ।রাজশাহী জেলা বিএনপিট একজন সিনিয়র নেতা বলেন, গত ১৫ বছরে যাঁরা বিএনপির সামনের সারির মুখ,যারা দলের জন্য জেল জুলুমের বার বার শিকার হয়েছেন, তাঁদের বাদ দিয়ে নিজেদের ঘনিষ্ঠ অরাজনৈতিক লোকদের কমিটিতে রাখা হয়েছে।
তারা নেতাদের এক যায়গায় আনতে পারেনি।ফলে দলের মধ্যে বিশৃংখলা থেকে গেছে।এ নিয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে কমিটির নেতাদেরই জিজ্ঞেস করেন।তবে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী বলেন, ‘সব মীমাংসা হয়ে গেছে।তাই তো একসঙ্গে চলছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে চার বছর।
জেলার ২৩টি সাংগঠনিক ইউনিটের মধ্যে মাত্র পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে ৭টির।জেলা কমিটির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ কারাগারে।জেলা বিএনপি বিপর্যস্ত।২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর মহানগর বিএনপির ৯ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।ওই কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়।
এরপর কমিটির সদস্য সচিব মামুন-অর-রশীদ কেন্দ্র থেকে ৬১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করিয়ে আনেন।এরপর বিরোধ আরও তুঙ্গে ওঠে।গত বছরের ৬ জুন সদস্য সচিবকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে আবেদন করা হয়।
আবেদনপত্রে কমিটির আহ্বায়ক ইরশাদ আলী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক, আসলাম সরকার, বজলুল হক ও জয়নাল আবেদীন স্বাক্ষর করেন।দলীয় সূত্র জানায়, এই বিরোধের কথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভিডিও কলের মাধ্যমে শুনেছেন।তিনি সবাইকে মিলেমিশে চলতে বলেন।
মামুন-অর-রশিদ বলেন, জ্যেষ্ঠ নেতাদের বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।সবাই সহযোগিতা করছেন।দলে কোনো সংকট নেই।সবাই এক সঙ্গে আছি এবং থাকবো।সরকার পতনের আন্দোলনেও এক সঙ্গে মাঠে আছি এবং থাকবো।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।