সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

যাত্রীসেবায় রেল বিমানের সাথে পাল্লা দিচ্ছে, রাজশাহীতে রেলদিবসে বক্তারা

আপডেটঃ ৩:১৩ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ১৫, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ

১৫ নভেম্বর, ছিল রেল দিবস।বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৫৯ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গত বছর এবং গতকাল এই দিনে বিভিন্ন অনাড়ম্বন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল রাজশাহীতে রেল দিবস পালন করা হয়েছে।রেল দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী রেলস্টেশনে সকালে এক আলোচনা সভার আয়োজন করাহয়।পশ্চিমাঞ্চল রেলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক অজয় কুমার পোদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায়  প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ,মোঃ শহীদুল ইসলাম (সিওপিএস),আহাসান আলী ভূঁইয়া (সিস্টেম), রেজাউল করিম (সিপিও),আসাবুল ইসলাম (সিসিআরএনবি)সহরেলওয়ে শ্রমিক লীগের সদর ও ওপেন লাইন শাখার সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।এর আগে রেল দিবস উপলক্ষে রাজশাহী রেলভবনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয় এবং নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে  রেলস্টেশনে এসে শেষ হয়।

আলোচনা সভায় রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, রেল ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠান।যে অঞ্চলের ওপর দিয়ে রেল গেছে সেখানে রেলকেন্দ্রিক জীবন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেছে।রেল সামাজিক বিবর্তন এবং অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় অসামান্য অবদান রেখে চলেছে।বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নে সরকার বিনিয়োগ বাড়িয়েছে।রেলকে গুরুত্ব দিয়ে ২০১১ সালে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়েছে।এরপর থেকে ধীরে ধীরে বিনিয়োগ বেড়েই চলেছে।বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলে ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর প্রথম চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত ৫৩ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ চালু করা হয়।তারপর বিভিন্ন ধরনের ঘাত-প্রতিঘাত মাড়িয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।বর্তমান জুয়েল বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় রেলে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্প, ঢাকা থেকে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প।এই প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :-

বাংলাদেশ রেলপথ সরকারি মালিকানা ও সরকার কর্তৃক পরিচালিত দেশের একটি মুখ্য পরিবহন সংস্থা।মোট ২৫০৮৩ জন নিয়মিত কর্মচারীসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট ২৯৫৫.৫৩ কি:মি: রুট রয়েছে।যেহেতু দেশের এক প্রান্তকে অন্য প্রান্তের সাথে সংযোজন করার জন্য রেলপথ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল পরিবহন ব্যবস্থা, তাই রেলপথের সার্বিক উন্নতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জুন ২, ১৯৮২ পর্যন্ত একজন চেয়ারম্যান ও চারজন মেম্বারসহ রেলওয়ে বোর্ডের নিকট রেলপথের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন ন্যস্ত ছিল।তারপর প্রশাসনিক ও কার্যপরিচালনার সুবিধার্থে রেলওয়ে বোর্ডের বিলুপ্তি ৩ জুন ১৯৮২ সালে কার্যকর হয় এবং রেলওয়ে বোর্ডের কার্যক্রম যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের রেলওয়ে ডিভিশনের নিকট ন্যস্ত হয় এবং উক্ত বিভাগের সচিব বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করে।

একই উদ্দেশ্যে দুই মহাব্যবস্থাপকের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ রেলওয়েকে পূর্ব ও পশ্চিম দুই অঞ্চলে ভাগ করা হয়।দুই অঞ্চলের দুইজন মহাব্যবস্থাপক বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের নিকট দায়বদ্ধ হয়।পরবর্তীতে ১২ আগস্ট ১৯৯৫ সালে রেলপথের দৈনন্দিন কার্যক্রম মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা হয়ে রেলওয়ে প্রফেশনালদের নিয়ে মহাপরিচালকের হাতে ন্যস্ত হয়।

নীতি নির্ধারণের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট Bangladesh Railway Authority (BRA) গঠিত হয়।অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও যুগ্ম মহাপরিচালকগণ সমস্ত প্রশাসনিক ও নীতি নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করেন।দুই জোনের মহাব্যবস্থাপকগণকে সহায়তা করেন বিভিন্ন বিশেষায়িত দপ্তর, যারা কার্য পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য দায়িত্বশীল থাকেন।

প্রত্যেক জোন আবার দুইটি প্রধান কার্য পরিচালনা বিভাগে বিভক্ত। এই বিভাগগুলো বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (DRM) এর অধীনে পরিচালিত হয় এবং সংস্থাপন, পরিবহন, বাণিজ্যিক, আর্খিক, যান্ত্রিক, ওয়ে এন্ড ওয়ার্কস, সংকেত ও টেলিযোগাযোগ, বৈদ্যুতিক, চিকিৎসা, নিরাপত্তা বাহিনীর মত বিভিন্ন বিশেষায়িত দপ্তরের বিভাগীয় কর্মকর্তারা তাকে সহায়তা করে থাকেন।

এছাড়াও দুইজন বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (Divisional Superintendent) এর অধীনে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী ও পশ্চিমাঞ্চলের সৈয়দপুর কারখানা (Workshop) আছে।অধিকন্তু ব্রড গেজ ও মিটার গেজ লোকোমোটিভের জেনারেল ওভারহলিং এর জন্য পার্বতীপুর চীফ এক্সিকিউটিভের নিয়ন্ত্রণে একটি লোকোমোটিভ কারখানা আছে।

বাংলাদেশ রেলওয়েতে রেক্টরের অধীনে ‘রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমী (RTA)’, প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তার অধীনে ‘পরিকল্পনা কোষ’ (Planning Cell), প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের অধীনে ‘সরঞ্জাম শাখা’ (Stores Department), দুই জোনের হিসাব ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের সমন্বয় ও পরামর্শের জন্য অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অর্থ) এর অধীনে ‘হিসাব বিভাগ’(Accounts Department) আছে।

ট্রেন পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত বাংলাদেশ রেলপথের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন এবং রেলপথে পরিবহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রথমে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পৃথক রেলপথ বিভাগ ও পরে রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।