সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

মৌমাছি পালন করে ভাগ্য বদল

আপডেটঃ ৪:৪৭ অপরাহ্ণ | মার্চ ০২, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

২০০০ সালে মাধ্যমিক পাস করেন শফিকুল।অর্থের অভাবে আর লেখাপড়া করতে পারেননি।রোজগারের চেষ্টায় বিভিন্ন পেশায় ছোটাছুটি করেছেন বেশ কিছুদিন, বারবার হোঁচট খেয়েছেন।শেষ পর্যন্ত মৌমাছি পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি।ছিলেন ভূমিহীন।সেখান থেকে জমি কিনে করেছেন পাকা বাড়ি।শুধু তা–ই নয়, অনেকের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করেছেন শফিকুল।এলাকার বেকার তরুণদের কাছে শফিকুল এখন অনুপ্রেরণা।রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার চানপাড়া গ্রামে বাড়ি শফিকুল ইসলামের।তাঁর মৌমাছি পালনের শুরুটা ২০০২ সালে।বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে পাবনার সাঁথিয়া থেকে কয়েক বাক্স মৌমাছি কিনে এনে শুরু করেছিলেন পথচলা।আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।বর্তমানে তাঁর ১০০টি মৌ–বাক্স রয়েছে। প্রতিটি বাক্স থেকে মাসে দু–তিনবার করে বিশেষ পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করেন।প্রতিবারে ১০ মণ করে মধু পাওয়া যায় ১০০টি বাক্স থেকে।এভাবে বছরে পাঁচ-সাত লাখ টাকা আয় হয় তাঁর।

শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি এপিস মেলিফেরা (Apis mellifera) জাতের মৌমাছি পালন করে থাকেন।মৌ–বাক্স নিয়ে ঘুরে বেড়ান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।শর্ষে, কালিজিরা, ধনে, লিচুর ফুল থেকে মধু সংগ্রহের জন্য মৌ–বাক্স নিয়ে ছোটেন নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর ও সাতক্ষীরা জেলায়।মধু সংগ্রহরে জন্য পিকআপে করে বাক্সগুলো নিয়ে যান।মধু সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করেন বিভিন্ন কোম্পানির কাছে।

সম্প্রতি তিনিও প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে মধু বাজারজাত করতে শুরু করেছেন।এ থেকে যা আয় হয়, তাতে পাঁচজন কর্মচারীর বেতন দিয়ে বাকিটা তাঁর।শফিকুল বলেন, মৌমাছি পালনে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো ব্যয় নেই।বছরের চার মাস মধু সংগ্রহ করা যায়।এর বাইরে এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মৌমাছিগুলো বাড়িতে রেখে পালন করতে হয়।

শফিকুল বলেন, মৌমাছি পালন করে তিনি সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন।এক ছেলেকে রাজশাহী শহরে রেখে এবং আরেকজনকে এলাকার একটি ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াচ্ছেন।এ সময়ের মধ্যে কুঁড়েঘর থেকে নিজের পাকা বাড়িতে উঠেছেন।ভূমিহীন থেকে নিজের নামে বাড়িভিটা ছাড়াও ভবানীগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় বেশ কিছু জমি কিনেছেন।সবকিছু সম্ভব হয়েছে মৌমাছি পালনের কারণে।

চানপাড়া গ্রামের শিক্ষক হিটলার হোসেন বলেন, শফিকুল ইসলাম মৌমাছি পালন করে নিজের সংসার ও জীবনে পরিবর্তন এনেছেন।মৌমাছি পালন করে যে সংসারের অভাব দূর করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়, এর দৃষ্টান্ত শফিকুল।সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে সাতক্ষীরায় বদলি হওয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এস এম মাহাবুর রহমান বলেন, মৌমাছি পালনে যে লাভবান হওয়া যায়, তা শফিকুল দেখিয়েছেন।শফিকুল সব সময় তাঁর কাছে পরামর্শ নিয়ে এগিয়েছেন।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী।