মাদক বহনের রুট রাজশাহীতে মাদক মাফিয়ারা ধরাছোঁয়ার বাইরে
আপডেটঃ ৬:২৮ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:- রাজশাহী ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় এই জেলা দেশের সর্বাধিক মাদকপ্রবণ এলাকা।সীমান্তবর্তী চাঁপাই নবাবগঞ্জের মাদক কারবারিরাও এই জেলাদিয়ও দেশের অভ্যন্তরে মাদক বহন করে থাকে।যার কারনে সীমান্তবর্তী এই দুই জেলার মাদক করারবারিদের রাজশাহীর উপর দিয়েই যেতে হয়ে।অন্যদিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চারঘাট ও বাঘা আন্তর্জাতিক মাদক পাচারের প্রধান রুট।বিশেষ করে হেরোইনের সিংহভাগই সীমান্তপথে ভারত থেকে পাচার হয় এই এলাকা গুলো হয়ে সারা দেশে পৌঁছে যাচ্ছে।তথ্যানুযায়ী শুধুমাত্র গোদাগাড়ীতেই রয়েছে তিন শতাধিক তালিকাভুক্ত মাদক পাচারকারী।এদের মধ্যে দেড় শতাধিক মাদক কারবারি মাদক মাফিয়া।শুধু ধরা পড়ে ছোট মাদক কারবারিরা।আর বড় মাদক কারবারি মাফিয়ারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, গোদাগাড়ীর সহড়াগাছি এলাকার জাহিদুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩) বেশ কিছুদিন ধরে মাদক নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের কর্মকর্তাদের সোর্স হিসেবে কাজ করছিলেন।এ সুযোগে সে নিজেও দেদারসে মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে।এছাড়া সে, মামলা ও আটকের ভয় দেখিয়ে এলাকার মাদক কারবারিদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে।
প্রতিদিনই তাকে প্রশাসনের লোকের সঙ্গে ঘুরতে দেখা যায় বলে জানান স্থানীয়রা।গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যার সময় রাজশাহীর র্যাব-৫ এর একটি দল ৪৯০টি ইয়াবাসহ সোর্স আল আমিনকে আটক করে।আল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গোদাগাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।পরে তাকে পাঠানো হয় জেলে।
আল আমিনের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মাদকের মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি জেলার পুলিশ সুপার ও র্যাব-৫ এ একটি লিখিত অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।এই অভিযোগে বলা হয়, মহিষালবাড়ির কাজল, মুরতাসিন ও জব্বার সোর্স কাম-মাদককারবারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করেন।
তারা বিভিন্ন সংস্থার নামে প্রকাশ্যে সাপ্তাহিক চাঁদা আদায় করে আসছেন।সম্প্রতি কয়েকজন বড় কারবারিকে আটক ও মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে।মহিষালবাড়ি হাটে তারা দিনভর বসে থাকেন এলাকার মাদক কারবারিদের নিয়ে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, মুরতাসিন ও কাজল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্সের পাশাপাশি নিজেরাও মাদকের কারবারে জড়িত।অতীতে তারা র্যাব ও পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে মাদকসহ একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিলেন।অন্যদিকে জব্বার মাদক কারবারিদের পক্ষে হয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন।
গোদাগাড়ীর কিছু মাদক কারবারির মধ্যে রয়েছে, মহিশালবাড়ীর আব্দুল মালেক, সনি, রায়হান, মোফা, সোহেল, ল্যাংড়া শামীম, টিপু, মনির, নবীন, শহিদুল ইসলাম ভোদল, ডিমভাঙ্গার রিনা, রেলবাজারের কারিমা, মাদারপুরের ইসাহাক, তারেক, মেডিকেল মোড়ের দুরুল হোদা, কালু, লালবাগের মিজান, বৃটিশ, রেলগেটের বাবু মেম্বার, তিতাস, বাইপাস এলাকার শালেমা খাতুন, উজান পাড়ার দুরুল, মিঠু, বাবু, সাদ্দাম, রহিম, মিন্টু, প্রেমতলী এলাকার তরিকুল, মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেলের পিতা কিছু দিন আগে গ্রেপ্তার হয়েছে ডিবি পুলিশের কাছে।
মাটিকাটা এলাকার আহাম্মদ আলী র্শীষ মাদক কারবারি।তার রয়েছে প্রচুর অবৈধ সম্পদ।মাদক ব্যবসা করে ওই এলাকার সবচে বেশি সম্পদের মালিক আহাম্মদ আলী।আহাম্মদ আলীর ব্যবসা দেখা শোনা করে তার ভাই।কিছু দিন আগে মাটিকাটা কলেজ মাঠ থেকে তার ভাই কে হেরোইনসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
এছাড়া আরো রয়েছে, মো শুভ, পিতাঃ রেজাউল পাগলা গ্রামঃ বড়গাছী, নবাব আলী পিতাঃ নৈয়মদ্দী গ্রামঃ মাছমাড়া, সাল্লাম পিতা মৃত গোলাম মোস্তফা গ্রামঃ বড়গাছী, আক্কাস গ্রামঃ ভাটোপাড়া ভাটা, সেলিম গ্রামঃ ভাটোপাড়া ভাটা, মিন্টু পিতাঃ ওদু ডিলার গ্রামঃ ভাটোপাড়া, বানি ইসরাইল হিটলার পিতাঃ নূরু গ্রামঃ ভাটেপাড়া, মুরসালিন পিতাঃ দানেশ মন্ডল গ্রামঃ বড়গাছী, খালিদ পিতাঃ মৃত্যুঃ এনামুল সরকার গ্রামঃ বড়গাছী, মোঃ মিলন পিতাঃ টুটুল গ্রামঃ বড়গাছী, ইসমাইল পিতা মৃত কায়েম গ্রাম হরিশংকর পুর।
এসব মাদক কারবারি ছাড়াও বড় বড় ব্যবসায়ীরা ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে।এছাড়া রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা সীমান্ত দিয়েও অবাধে আসছে হিরোইন,ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদক।এছাড়া জেলার ভেতরে সর্বতই হাত বাড়ালেই অবাদে মেলে মাদক।এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, আমাদের সোর্স বলে কিছু নেই।
তাছাড়া যেসব টিম মাঠে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন তারা নিয়ম মেনেই করেন।ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া আল আমিন পুলিশের সোর্স নয় বলেন তিনি।জেলা ডিবি পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যহত রয়েছে।
IPCS News : আবুল কা্লাম আজাদ: রাজশাহী।