মদনে স্ত্রী ও শ্বাশুরির দেয়া আগুনে মারা গেলেন একলাছ।
আপডেটঃ ৩:৫৫ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ২০, ২০২৩
নিউজ ডেস্কঃ
নেত্রকোনা:- মদনে স্ত্রী-শ্বাশুরির দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে হতভাগা এখলাছ মিয়া (৩৩) অবশেষে মারা গেলেন।টানা ৫ দিন মৃৃত্যুর সাথে লড়াই করে (১৮ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা মারা যান তিনি।পারিবারিক কলহের জেরে গত ১৩ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকেস্ত্রী-শ্বাশুরীর পেট্রোলের আগুনে মারাত্মক ভাবে দগ্ধ হন এখলাছ মিয়া।এ ঘটনায় দগ্ধ এখলাছের বড় ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার মদন থানায় মামলাটি রুজু করেছেন।মামলার এজাহারে প্রধান আসামী করা হয়েছে স্ত্রী মুক্তা আক্তারকে (২৮)।ওই মামলায় এজাহার নামীয় শ্বশুর খায়রুল (৫৫) ও শ্বাশুরী লুৎফুর নেছা (৫০) সহ আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামী রাখা হয়েছে।মামলায় একে অপরের যোগ সাজশে হত্যার উদ্দেশ্যে গায়ে আগুন দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ বছর পূর্বে কেন্দুুয়া উপজেলার নওপাড়া গ্রামের এখলাছ উদ্দিনের সঙ্গে মদন উপজেলার বাড়রি গ্রামের খায়রুল মিয়ার মেয়ে মুক্তা আক্তারের বিয়ে হয়।বিয়ের কিছুদিন পর পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে এখলাছ সৌদি আরব চলে যান।বিদেশ থাকা অবস্থায় তার রোজগারের টাকা স্ত্রীর কাছেই পাঠাতেন।
তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন সন্তানাদি নেই।স্ত্রী বাপের বাড়িতে থাকতেন।সম্প্রতি এখলাছ মিয়া বাড়িতে এসে স্ত্রীর কাছে টাকা পয়সার হিসাব চাইলে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়।এ নিয়ে কয়েকদফা পারিবারিক দেনদরবার হয়েছে।তবুও স্ত্রীকে বশে এনে তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করতে পারেনি।গত রোববার রাতে শ্বশুরবাড়িতে যায় এখলাছ।রাতে খাওয়ার পর ঘরে স্ত্রীর সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন।
সোমবার সকাল ৮টার দিকেটাকা-পয়সার হিসেব নিয়ে কথার কাটাকাটি এক পর্যায়ে তাকে হাত-পা বেঁধে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় স্ত্রী,শ্বাশুরি ও শ্বশুরবাড়ি লোকজন।এ সময় তার আত্ম চিৎকারে প্রতিবেশি লোক জন এসে দগ্ধ এখলাছকে উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি থাকায় কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
সেখানেও চিকিৎসকরা ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট প্রেরণ করলে তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করে।এবং সেখানেই আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।তাঁর স্বজনের মাধ্যমে একটি ভিডিও ক্লীপ এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।তাতে এখলাছকে বলতে শুনা যাচ্ছে বিদেশের আয় রোজগারের ৫/৬ লাখ টাকাসহ স্বর্ণালংকার স্ত্রী কাছে ছিল।
দেশে এসে ওই টাকা উদ্ধারের জন্য শ্বশুরবাড়ি লোকজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।ওই খানের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছেও বিচারপ্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।কিন্তু কোথাও বিচার পায়নি এখলাছ।রোববার স্ত্রী তাকে ডেকে নেয়।সোমবার সকাল ৮ টার দিকে স্ত্রী শ্বাশুরিসহ অন্যরা মিলে তার শরীরের পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এখলাছের মৃৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মদন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান,আগের মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।আসামীদের ধরতে সব ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
IPCS News : Dhaka : শহীদুল ইসলাম : নেত্রকোনা।