সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

ভিডিও কলে বিয়ে, ফুলসজ্জার আগেই বিধবা

আপডেটঃ ২:৪৪ অপরাহ্ণ | জুলাই ১৬, ২০২৩

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:- স্বামীর মৃত্যু সংবাদে থামছেই না মরিয়মের আহাজারি।কান্না জড়িত কন্ঠে মরিয়ম বলেন, কেনো তুই শুক্রবারের নামাজ পড়লি না রে রুবেল।নামাজ পরলে তোকে তোকে আর মরতে হতো না।সে আমাকে অনেক ভালবাসতো।কাজের ফাঁকে যখনই সময় পেতো আমার সাথে ভিডিও কলে কথা বলতো।আমি রাগারাগি করতাম, বারবার ওকে দেশে আসতে বলতাম।ও আমাকে খালি সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতো।বলতো একটু ধৈর্য ধরো।দূরে থেকে শুধুই সান্ত্বনা দিত।শুক্রবার (১৪ জুলাই) সৌদি আরবে সোফা কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া রাজশাহীর বাগমারার মৃত প্রবাসি রুবেল হোসেনের স্ত্রী মরিয়ম এমন কথা গুলো বলছিলেন।রাজশাহীর বাগমারার মাধাইমুড়ি গ্রামের সাত বছরের প্রবাসী রুবেল হোসাইন নয় মাস ছয়দিন আগে মোবাইল ফোনে ভিডিও কনফারেন্সে বিয়ে করেন।

প্রেম করে বিয়ে হলেও স্বামীর সঙ্গে সাক্ষাত হওয়ার আগে বিধবা হলেন কলেজছাত্রী মরিয়ম আক্তার।১৬ জুলাই রবিবার দুপুরে সরজমিনে রুবেল হোসাইনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় মরিয়ম আক্তার মোবাইল ফোনে স্বামীর ছবি দেখে প্রলাপ করছেন, “আমার স্বামীকে একটার বার হলেও দেখতে চাই রে…।স্বামীকে আমি কাছ থেকে দেখিনি রে…।

আপনাদের পায়ে ধরি রে…; আমার স্বামীকে একনা এনে দেন…রে ভাই।স্বামিকে কোন দিন চোখের কাছ থেকে দেখিনি রে…।যা দেখেছি দূরে থ্যাকা…রে।যত কথা কছে দূরে থ্যাকাই কথা কছে রে..আমি মোবাইল ভাংগিছি তাই একটা কথা কইনি রে…।সাথে সাথে মোবাইল কিনে দিয়েছে।বিয়ের আগেও দুইটা মোবাইল ভাংগিছি রে…।

উনি আমাক কিনে দিছে রে…।মোবাইলে স্বামীর ছবি দেখে কাঁদতে কাঁদতে মরিয়ম বলছিলেন, আমার রুবেল বড় বড় চুল রাখতো রে…।ঈদের আগে আমি বলে চুল কাটিয়েছি রে…।বলে তাকে বলছিল রে… মায়ের কথায় চুল কাটিসনি; বউয়ের কথায় চুল কাটলু।আরেক ছবি দেখে বলছিলেন এই গেঞ্জি পড়ে আমার রুবেল মারা গেছে রে…।

মরিয়ম জানান, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে তাদের শেষ কথা হয়।দেশে আসার জন্য শুক্রবার কাগজপত্র জমা দিয়ে কারখানায় যাবেন বলে স্ত্রীকে জানিয়েছিল রুবেল।শুক্রবার রাতে আবার কথা বলবে বলেছিল।রাতে কলও দিয়েছিল মরিয়ম।কিন্তু ফোন বাজে কেউ রিসিভ করেনি। রাত নয়টা পর্যন্ত ফোন বেজেছে।এরপর ফোন আর বাজেনি।

শনিবার সকাল ৮টার দিকে রুবেলের প্রবাসী বড় ভাই ফোন করে জানায় রুবেল মারা গেছে।তিন ভাইয়ের মধ্যে রুবেল সবার ছোটে।স্থানীয় দালালকে ১৬ কাঠা জমি লিখে দেওয়া ছাড়াও দেড় লাখ টাকা নগদ দিয়ে ২০১৬ সালে সৌদি আরব পাড়ি জমান রুবেল।তার বড় দুই ভাই আগে থেকেই প্রবাসী।বড়ভাই সৌদি আরব এবং মেজে ভাই দুবাই থাকেন।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।