সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

ভর্তিসহ পড়া-লেখার টাকার চিন্তায় দিশেহারা পরিবার

আপডেটঃ ৫:১৮ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৬, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

দিনাজপুর:- দিনাজপুরের সদর উপজেলার নয়নপুর এলাকায় শ্রমজীবী পরিবারের ছেলে রমজান আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।দারিদ্রতাসহ নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই অর্জন মা বাবার জন্য যেমন আনন্দের বিষয় একই সঙ্গে দুঃচিন্তার বিষয়ও হয়ে দাঁড়িয়েছে।মেডিকেলে পড়ার মত এতো খরচ কোথা খেকে যোগাড় করবেন সেই চিন্তায় এখন দিশেহারা।কখনও সাহায্য না চাওয়া রমজানের বাবা মা সরকারসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে সহযোগিতা কামনা করছেন তাদের ছেলের স্বপ্ন পূরণের জন্য।স্থানীয়রাও তাদের গর্ব মেধাবী এই তরুণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।জানা গেছে, রমজান আলী ২০২১-২২ এর মেডিকেলে ভর্তি পরিক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় ১৫১৮তম হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়।

সে শহরের উত্তর বালুবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ২০১৩ সালে ৫ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিসহ জিপিএ-৫, চেহেলগাজী শিক্ষা নিকেতন হতে ২০১৬ সালে জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিসহ জিপিএ-৫, একই স্কুল হতে ২০১৯ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ এবং দিনাজপুর সরকারী কলেজ হতে ২০২১ সালে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে মেধার পরিচয় দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দিনাজপুর শহরের নয়নপুরে দু হাজার টাকায় দুটো টিনশেডের ঘর ভাড়া করে থাকেন স্বামী রিয়াজুল ইসলাম ও স্ত্রী নুরুফা বেগম। বড় দুই ছেলে বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছে।সবচেয়ে ছোট ছেলে রমজান আলীকে নিয়ে তাদের তিনজনের সংসার।বাবা মা ভাতের হোটেলে ব্যস্ত। অন্যদিনের মত এদিনও বাসায় রমজান ছিল একা। কথা হয় তার সঙ্গে।

দারিদ্রতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তার যুদ্ধ জয়ের গল্প অন্যদের জন্যেও প্রেরণাদায়ক।বাবা মার পরিশ্রমের পাশাপাশি তার নিজেরও প্রচন্ড শ্রম ও মেধা তাকে এতো দূর পর্যন্ত এনেছে।রমজান আলীর চিকিৎসক হওয়ার কোন ভাবনা তার মাথায় ছিল না।মায়ের অসুস্থতা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও চিকিৎসা খাতে অব্যবস্থাপনা তাকে চিকিৎসক হওয়ার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর করেছে বলে জানান রমজান।

রমজানের অর্জনে গর্বিত বাবা রিয়াজুল ইসলাম ও মা নুরুফা বেগম।তারা স্বামী স্ত্রী দিনাজপুর পঞ্চগড় মহাসড়কে রাস্তার ধারে ভাতের হোটেল চালান।মা নুরুফা জানান, মানুষের বাড়িতে, ছাত্রাবাস ও বিভিন্ন মেসে বুয়ার কাজ করেছেন ছেলেকে পড়াশুনা করিয়েছেন।বাবাও প্রচন্ড কষ্ট করেছেন রমজানকে এ পর্যন্ত এগিয়ে নিতে।

ছেলের স্বপ্নপূরণে বাকী পথটুকু পার করতেও তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।তবে তিনি জানান, এটা তার জন্য অনেক বেশি কঠিন।তার সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।এলাকাবাসীর কাছে রমজান অতিপ্রিয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়া মেধাবী ছাত্র রমজান আলীর ভর্তি ও পড়ালেখায় পাশে দাড়ানোর জন্য সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানান এই পরিবারটি।

IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম : দিনাজপুর।