সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

ভরা মৌসুমেও রাজশাহীতে চালের বাজার উর্দ্ধগতি

আপডেটঃ ৭:৪৮ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ১৩, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ

এখন আমন ধানের ভরা মৌসুম।এই মৌসুমে ধান ও চালের বাজার নিম্নমুখী হওয়ার কথা।কিন্তু বাস্তবে এর উল্টোটা।রাজশাহীতে আমনের এই ভরা মৌসুমেও চালের বাজার ঊর্দ্ধগতি।গত বছরের শুরু থেকেই দফায় দফায় সব ধরণের চালের দাম বেড়েছে।তবে এবার বেড়েছে সরু জাতের চালের দাম।গত এক সপ্তারের ব্যবধানে এবার বেড়েছে বোরো মৌসুমের জিরা, কাটারি, বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ চালের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সরু ও মাঝারি চালের দাম বেড়েছে।শম্পা কাটারি জাতের চাল এক সপ্তাহ আগে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল, তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ টাকায়।অন্যদিকে মোটা জাতের স্বর্ণা চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত কমে এখন ৪৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।নতুন আমন মৌসুমের চালের সরবরাহ বাড়ায় দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম নওগাঁয় মোটা চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত কমেছে।

তবে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সরু ও মাঝারি জাতের চালের দাম।রাজশাহী মহানগরীর  বড় চালের আড়ত কাদিরগঞ্জে ও সাহেব বাজারের চালের মোকামে বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে যে স্বর্ণা-৫ ও গুটি স্বর্ণা জাতের চালের বস্তা (৫০ কেজি) বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ১৫০ টাকায়, তা এখন ২ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আর সরু চালের (মিনিকেট ও শম্পা কাটারি) দাম বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের চাল বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজারে আমন মৌসুমের ধান স্বর্ণা-৫ ও গুটি স্বর্ণা ধানের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এসব ধানের দাম পড়ে গেছে। ফলে মোটা চালের দাম কমেছে।আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মোটা চালের দাম আরও কমতে পারে বলে জানা গেছে।অন্যদিকে বোরো মৌসুমের জিরা, কাটারি, বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ চালের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সরু ও মাঝারি চালের দাম বেড়েছে।সরু ও মাঝারি জাতের চালের দাম আর কমার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন মিলমালিক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল।এ পরিমাণ জমি থেকে চালের উৎপাদন হয় ৮ লাখ ১৮ হাজার ২৩৬ মেট্রিক টন।চিকন জাতের ধানের উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৩০ হেক্টর জমিতে।এ পরিমাণ জমি থেকে ধান উৎপাদন হয় ৬ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন এবং চাল ৪ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন।

জেলার পাইকারি ও পৌর খুচরা চাল বাজার সূত্রে জানা যায়, পাইকারিতে সরু ও মাঝারি ব্রি-২৮ চালের দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৪৮-৪৯ টাকা, আগে ছিল ৪৫-৪৬ টাকা, ব্রি-২৯ চালের দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৪৬-৪৭ টাকা, আগে ছিল ৪৪-৪৫ টাকা, মিনিকেট চালের দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৫৪-৫৫ টাকা, আগে ছিল ৫৩-৫৪ টাকা।

নাজিরশাইল বা সম্পা কাটারি এক সিদ্ধ চাল ২-৩ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি ৬২-৬৩ টাকা ও দুই সিদ্ধ চালের দাম প্রতি কেজি ৫৮-৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া মোটা জাতের স্বর্ণা চালের দাম ৩৯-৪০ টাকা এবং গুটি ৩৮-৩৯ টাকা।খুচরা বাজারে ৪-৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে ব্রি-২৮ চালের দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৫২-৫৪ টাকা।

ব্রি-২৯ চাল প্রতি কেজি ৪৮-৫০ টাকা, মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬০-৬২ টাকা, নাজিরশাইল বা সম্পা কাটারি প্রকারভেদে প্রতি কেজি ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া মোটা জাতের চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মোটা চালের দাম কমতে পারে।বোরো মৌসুমে সরু ও মাঝারি জাতের ধান উৎপাদন হয়।

সরু ও মাঝারি চাল হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল ও কাটারি জাতের চালের চাহিদা রয়েছে প্রচুর।বছরে একবার ধান উৎপাদন হওয়ায় সারা বছর তার ওপর নির্ভর করতে হয়।এ ধান থেকে বছরে ৮ থেকে ৯ মাস চাহিদা পুরনের পর শেষ সময় এসে দাম বাড়তে থাকে।সব শ্রেনী পেশার মানুষের খাদ্যভাস পরিবর্তন হয়েছে।

দিনমজুরাও মোটা চালের ভাত খেতে অভ্যস্ত না।তারা এখন সরু ও মাঝারি জাতের চালের ভাত খেতে অভ্যস্ত।বোরো মৌসুমের জিরাশাইল ও কাটারি ধানের সরবরাহ এখন বাজারে নেই বললেই চলে।রাজশাহী চাউল আড়ৎদার সমিতির সভাপতি সোলায়মান বলেন, বোরো ধান বছরে এক বার উৎপাদন হয়।যা সারা বছর এ ধানের ওপর নির্ভর করতে হয়।

ইতোমধ্যে বছরের ৮মাস চলে গেছে।স্বাভাবিক ভাবে যখন ফসল উৎপাদন হয় তখন আমদানি বেশি থাকে এবং দামও কম হয়।জিরাশাইল চাল যা মিনিকেট নামে পরিচিত।কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কাছে চিকন ধান ও চালের পরিমাণ কমে আসছে।চালের দাম বাড়ার মুল কারণ হচ্ছে বাজারে চালের পরিমাণ কমে গেছে।

আর এ কারণে বাজারে চিকন বা সরু ও মাঝারি জাতের চালের দাম বেড়েছে।চালের দাম কমার জন্য আগামী বছরের বোরো ধান উৎপাদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।