সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

বিলুপ্ত টার্ন টেবিলের স্থানে পুন:স্থাপিত হলো রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর টার্ন টেবিল

আপডেটঃ ১:৪৮ অপরাহ্ণ | মে ১৮, ২০২৪

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:- লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর টার্ন টেবিলটি প্রায় তিন দশক আগে পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়।নতুন করে সেখানে এই যন্ত্র নির্মাণ করা হয়েছে।গত সোমবার এটি সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।শিগগিরই এর ব্যবহার শুরু হবে।লালমনিরহাট রেলস্টেশনের আধা কিলো মিটার উত্তর-পূর্ব দিকে সিক লাইন এলাকায় ৯ শতক জমির ওপর টার্ন টেবিলটির অবস্থান।রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, লালমনিরহাটে প্রথমবারের মতো দেশে টার্ন টেবিল নির্মাণ করা হয়েছে।দেশের আগের টার্ন টেবিল গুলো ব্রিটিশ আমলের, বিদেশ থেকে আনা।লালমনিরহাটের টার্ন টেবিলটি বিকল হওয়ার পর পশ্চিমাঞ্চলের রেলের ইঞ্জিন ও কোচ গুলো কয়েক মাস পরপর ঢাকা থেকে ঘুরিয়ে আনা হতো।নতুন টার্ন টেবিল নির্মাণ চালু হলে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে।পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন,১৯৯৩ সালে লালমনিরহাটের টার্ন টেবিলটি পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়।

দীর্ঘদিন পর নতুন করে টার্ন টেবিল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের (পশ্চিম) কার্যালয় থেকে প্রশাসনিক অনুমোদনের চিঠি দেওয়া হয়।বিভাগীয় রেলওয়ে দপ্তরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) মো. তাসরুজ্জামানের (বাবু) নকশা ও প্রযুক্তিতে এটি তৈরি হয়েছে।

নির্মাণকাজ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে; শেষ হয়েছে গত মার্চ মাসে।এতে ব্যয় হয়েছে ২৫ লাখ টাকা।পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক আরো বলেন, লালমনিরহাটে অকেজো টার্ন টেবিল স্থানীয় কর্মকর্তারা কম খরচে এটি সচল করেছেন।এটি ভালো উদ্যোগ।রেলের কর্মকর্তারা সব সময় নিজেদের মেধা দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন।

এটি তার উদাহরণ।লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে দপ্তরের সূত্রে জানা যায়, নতুন টার্ন টেবিলের কার্যকারিতা সফলভাবে যাচাই করা হয়েছে।এটি বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম টার্ন টেবিল।চলতি মে মাসের শেষ দিকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

উদ্বোধন করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাক অসীম কুমার তালুকদার,প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসবেন।টার্ন টেবিল কেন দরকার একটি কোচ বা ইঞ্জিনকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর টার্ন টেবিলের ওপর রেখে ঘোরানো হয়।এতে বাঁ দিকের চাকা ডান দিকে, ডান দিকের চাকা বাঁ দিকে চলে যায়।

ফলে দুই পাশের চাকা সমানভাবে ক্ষয় হয়।এতে চাকার স্থায়িত্ব বাড়ে।চালক যদি ইঞ্জিনের পেছনে বসেন, তাহলে রেললাইনের সংকেত (সিগন্যাল) দেখতে অসুবিধা হয়।এতে ট্রেনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে।দীর্ঘদিন ধরে লালমনিরহাটে টার্ন টেবিল না থাকায় মিটারগেজে চলমান ইঞ্জিন ও কোচ কয়েক মাস পরপর ঢাকার কমলাপুরে টার্ন টেবিলের মাধ্যমে ঘুরিয়ে নিয়ে আসা হতো।

এটি ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে কোচবিহীন হালকা ইঞ্জিন পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ।এ জন্য এর সঙ্গে কিছু কোচ সংযুক্ত করতে হতো।ভার বহন করতে পারবে ৩৫০ টন, টার্ন টেবিলে ১৪ টন ওজনের একটি ব্রিজ রয়েছে।এটি এই যন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।এর ওপরে ইঞ্জিন ও কোচ তুলে ঘোরানো হয়।

স্থাপনাটির তিন ধাপে পাকা দেয়াল রয়েছে, যা সীমানা-প্রাচীর, সুরক্ষা-প্রাচীর ও লাইন দেয়াল নামে পরিচিত।এর মেঝে আরসিসি ঢালাই দেওয়া।এতে পানি জমলে পানির পাম্প দিয়ে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে।টার্ন টেবিলটি নির্মাণে ৩৫০ টন ভার বহনে সক্ষম একটি রোলার থ্রাস্ট বিয়ারিং, আটটি এক্সেল বিয়ারিং, ব্রিজ নির্মাণের জন্য এমএস লোহার তৈরি এইচবিম, অব্যবহৃত রেললাইন, ট্রেনের অব্যবহৃত চারটি চাকা, এমএস টপ প্লেট, চেকার প্লেট, বলস্টার প্লেট, এমএস অ্যাঙ্গে

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাাজশাহী।