সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

বাইছা লন’ ব্যবস্থাপনায় চলছে রাজশাহী শাহমখদুম বিমান বন্দর

আপডেটঃ ৭:২৫ অপরাহ্ণ | মার্চ ২৭, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী  : কোনো কনভেয়ার বেল্ট নেই।তাই বিমান থেকে যাত্রীদের সব লাগেজ ট্রলিতে করে গেটে নিয়ে আসা হয় রানওয়ে থেকে।পরে এই ট্রলি থেকেই নিজের লাগেজটি খুঁজে নিতে যাত্রীরা শুরু করেন টানা-হেঁচড়া, হুড়োহুড়ি।ব্যাগ নেয়ার এই পদ্ধতিকে অসম্মানের বলছেন রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরের যাত্রীরা।বিষয়টির সমাধান নিয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, লাগেজবাহী কনভেয়ার বেল্ট বসানোর জায়গাই নেই রাজশাহীর বিমানবন্দরটিতে।শাহ মখদুম বিমানবন্দরে গড়ে প্রতিদিন ৬টি বিমান ওঠানামা করে।এসব বিমানে রাজশাহী-ঢাকা রুটে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিনশত যাত্রী চলাফেরা করেন।বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, ফ্লাইট অবতরণের পর বিমান থেকে একটি বড় ট্রলিতে করে রাজশাহী বিমানবন্দরের রানওয়ে গেটের কাছে নিয়ে আসা হয় যাত্রীদের লাগেজ।পরে এক এক করে নিজেদের লাগেজ বেছে নিতে হয় তাদের।

ব্যাগ বাছাইয়ের সময় বিশৃঙ্খলার পরিবেশ বিরাজ করে।এ সময় কে আগে ব্যাগ নেবেন আর কে পরে নেবেন তা নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতা।বিমানবন্দর থেকে আগে বের হওয়ার জন্য অনেকেই হুড়োহুড়ি শুরু করেন।এতে অনেক সময় একজনের ব্যাগ অন্যজন নিয়ে যাবার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।সম্প্রতি বিমানযোগে রাজশাহী আসেন ঢাকার সাংবাদিক রিজভি নেওয়াজ।

পরে লাগেজ বিড়ম্বনা নিয়ে ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট দেন।ট্রলি থেকে যাত্রীদের নিজ নিজ ব্যাগ বাছাই করে নেয়ার ওই ভিডিওটি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, “দারুণ গোছানো রাজশাহী শহরের সঙ্গে এই ছবি বেমানান।বিমানবন্দরে লাগেজের জন্য কোনো বেল্ট নাই।বাইছা লন’ টাইপের ব্যবস্থাপনার আশু সমাধান চাই।

সম্প্রতি ঢাকা থেকে রাজশাহী আসা ইজহারুল ইসলাম বলেন, ব্যাগ নেয়ার পদ্ধতিটা এখানে খুবই অগোছালো।ট্রলি থেকে ব্যাগ নেয়ার সময় অনেকের কাছে এটি অসম্মানেরও।কারণ বিমান থেকে নামার পর সবাই এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু করেন।ব্যাগ বাছাইয়ের প্রতিযোগিতা।ট্রলিতে ব্যাগ টানাটানি করে নিজেরটা নিয়ে যান।এই সিস্টেমটা বদলানো দরকার।

ঢাকায় যেমন বিমান থেকে নেমে গেটে গিয়ে ব্যাগ পাওয়া যায়।শাহ মখদুমেও এমন একটি ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান ইজহারুল।ঢাকা থেকে রাজশাহীতে ফ্লাইট পরিচালনা করা ইউএস বাংলা কোম্পানির রাজশাহী অফিসের ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের বিমানের লাগেজ হোল্ড থাকে, সেখানেই ব্যাগগুলো পরিবহন করা হয়।

প্রত্যেক লাগেজে একটি করে ট্যাগ থাকে।রাজশাহীতে এলে আমরাই এগুলো বিতরণ করি।এখানে যে সুযোগ-সুবিধা আছে সেভাবেই বিতরণ করি।কনভেয়ার বেল্ট থাকলে তো সুবিধা হতোই।

আসলে কনভেয়ার বেল্ট তো একটি আধুনিক বিমানবন্দরেরই অংশ।রাজশাহী বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান খাইরুন নাহার স্বীকার করেন কনভেয়ার বেল্ট না থাকায় বিড়ম্বনা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘মাঝেমধ্যে ব্যাগ বদলেও যায়।গত মাসে এ রকম একটি ঘটনা ঘটে।পরে তারা দুই পক্ষ এসে পরিবর্তন করে নিয়ে গেছেন।তিনি জানান, ইতোমধ্যে কনভেয়ার বেল্টের জন্য আবেদন জানালেও শাহ মখদুম বিমানবন্দরে এটি বসানোর মতো জায়গাই আসলে নেই।খাইরুন নাহার বলেন, আমাদের জায়গা খুব অল্প।

যাত্রীদেরই বসার জায়গা নেই, কনভেয়ার বেল্ট বসানো হবে কোথায় ? তারপরও কনভেয়ার বেল্ট বসানোর সম্ভাব্যতা কর্তৃপক্ষ যাচাই করে দেখছে বলে দাবি করেছেন খাইরুন।শাহ মখদুম (রহ.) বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক দিলারা পারভিন বলেন, আমাদের এয়ারপোর্টে লাগেজগুলো চেক করে এয়ার লাইনস কর্তৃপক্ষকে দিয়ে দিই।তারা এগুলোতে ট্যাগ সংযুক্ত করে।

পরে যাত্রীরা ট্যাগ নম্বর মিলিয়ে লাগেজ নিয়ে যান।কনভেয়ার বেল্ট বসানোর জায়গা নেই জানিয়ে দিলারা পারভিন বলেন, তারপরও এগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা আছে।কী করা যায় ভাবা হচ্ছে।

এদিকে রাজশাহী থেকে এখন শুধু ঢাকা রুটেই বিমান চলাচল করে।বাংলাদেশ বিমান, ইউএস বাংলা ও নভোএয়ার-এই তিনটি কোম্পানির বেশির ভাগ বিমানই খুবই কম সময়ের ব্যবধানে উড্ডয়ন ও অবতরণ করে।

সাধারণত দুটি বিমানের মধ্যে গড় পার্থক্য থাকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট।যাত্রীরা বলেছেন, এই সময়ে কার্যক্রম সারতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অবস্থা একেবারে হযবরল।সবাইকেই দেখা যায় তাড়াহুড়া করতে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।