সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

প্রাণী জগতের অস্তিত্ব রক্ষায় উদ্ভিদের বিকল্প নেই।গাছ আছে বলেই পৃথিবী আজও বসবাসের যোগ্য: বৃক্ষপ্রেমী আখতার হামিদ

আপডেটঃ ১:২৪ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ০৫, ২০২৩

নিউজ ডেস্কঃ

দিনাজপুর:- সবাই বৃক্ষপ্রেমী হতে পারে না।এর জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছ, ত্যাগী মনমানসিকতা।এমন মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের শখ প‚রণ করতেই ছুটির দিনে সরকারি চাকুরীজীবি আখতার হামিদ বিভিন্ন প্রকার গাছ রোপণ করে থাকেন।ফলে দিনাজপুরের মানুষ আখতার হামিদকে বৃক্ষপ্রেমী বলেন।নানা প্রজাতির গাছ, ফলদ-বনজ, সৌন্দর্য বর্ধক গাছ লাগানোই তার জীবনে সবচেয়ে বড় শখ।

আখতার হামিদ দিনাজপুর শহরের উত্তর বালুবাড়ী এলাকায় বসবাস করেন।গাছ মানুষের বন্ধু।গাছ নানাভাবে আমাদের উপকার করে।খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, অক্সিজেন, ওষুধ ইত্যাদি আমরা গাছ থেকে পাই।গাছের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।প্রাণী জগতের অস্তিত্ব রক্ষায় উদ্ভিদের বিকল্প নেই।গাছ আছে বলেই পৃথিবী আজও বসবাসের যোগ্য।

বৃক্ষপ্রেমী আখতার হামিদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সরকারী চাকরি করি তাই ছুটির দিনে বা অবসর সময় পেলেই মানুষের কল্যাণে গাছ লাগাই।ছোট বেলা থেকেই বাবা-মা’র কাছে গাছ লাগানোর উৎসাহ পেয়েছি।ছোট বেলায় বাবার সাথে বাড়ির পার্শ্বে সরকারি রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গায়, পুকুর পাড়ে তাল, কড়ই, বাঁশ, বরই, বেল, আম, কাঁঠাল, লেবু এবং সৌন্দর্যবর্ধক বিভিন্ন চারা রোপণ করেছি।

যেখানেই চাকরির সুবাদে যেতে হয় আমি সেখানেই বৃক্ষ রোপণ করেছি।এই বৃক্ষ রোপণ যেন আমার রক্তে মিশে গেছে।নিজে গাছ লাগিয়ে সেই গাছের ফল খাওয়ার মত আনন্দ অন্যরকম।বৈচিত্র্যময় এই আনন্দ যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।উপলব্ধি করতে হয়।

দিনাজপুর সদরের বিভিন্ন সরকারি জায়গায় যেমন- রামসাগর জাতীয় উদ্যানের প্রধান রাস্তায়, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডাম্পিং এরিয়া থেকে প‚র্ব দিকে, শিশু পার্কের পুকুর পাড়ে, শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের ধারে তালসহ বিভিন্ন গাছ রোপন করেছেন।অনেককে তিনি ফল ও ফুলের চারা উপহার দিয়েছেন।

এছাড়া তিনি গাছ লাগানোর একটা সুন্দর ধারণাও দিয়েছেন তা হলো- বট, পাকুর গাছের ডাল মাটিতে পঁতে দিলেও গাছ হয়ে যাবে যেমন ৮-১০ইঞ্চি মোটা এবং ৭-৮ফিট লম্বা বট,পাকুড়।বট,পাকুড় গাছের ডাল রাস্তার কোন মোড়ে বা ফাঁকা জায়গায় লাগালেই গাছ হয়ে যাবে।যার নীচে
এক সময় মানুষ বিশ্রাম নিতে পারবে।এছাড়া পশু-পাখির বাসা বাঁধবে, ফল খাবে।সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, ৫০ বছর বেঁচে থাকা একটি গাছ বায়ু দুষণ থেকে পরিবেশ রক্ষায় ১০ লাখ টাকা, জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন দেয় ৫ লাখ টাকা, বৃষ্টির অনুক‚ল পরিবেশ সৃষ্টি করে বাঁচায় ৫ লাখ টাকা, মাটির ক্ষয়রোধ ও উর্বর শক্তি বৃদ্ধি করে বাঁচায় ৫ লাখ টাকা, বৃক্ষে বসবাসকারী প্রাণীদের খাদ্য ও আশ্রয় দিয়ে বাঁচায় ৫ লাখ টাকা, আসবাবপত্র, জ্বালানি কাঠ ও ফল সরবরাহ করে ৫ লাখ টাকা, বিভিন্ন জীব-জন্তুর খাদ্য জোগান দিয়ে বাঁচায় আরও ৪০ হাজার টাকা।

একটি বৃক্ষের আর্থিক সুবিধার ম‚ল্য তাহলে দাঁড়ায় ৩৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।যেসব এলাকায় গাছের পরিমাণ বেশি, সেখানে বন্যা ও ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণ কম।গাছপালা মানুষকে সন্তানের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে।একটি দেশের মোট ভূ-খন্ডের কমপক্ষে ২৫ ভাগ বনভূমি প্রযয়োজন।বাংলাদেশে সেই তুলনায় অনেক কম।

পর্যাপ্ত বনভ‚মি না থাকায় প্রতিনিয়ত বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে।মরুভ‚মিতে রূপান্তর হচ্ছে দেশ।কাবর্ন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ প্রাণী জগতে বেড়েছে।ক্ষতিকর ক্লোরোফ্লোরো কার্বন, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ অনেক গুণ বেড়েছে।ওজন স্তরে ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে।অ্যাসিড বৃষ্টি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এন্টার্কটিকার বরফ গলে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গাছ কমায় আবহাওয়ার আচরণও বদলেছে।গরমের সময় অতিরিক্ত গরম, ঠান্ডার সময় কখনো অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম।এছাড়া পেয়েছে কৃষি উৎপাদন হ্রাস।পরিবেশ-প্রকৃতি বাঁচাতে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই।

জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ও জনসংখ্যার চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে বৃক্ষ রোপণের কোনো বিকল্প নেই।সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত ভাবে সকলের উচিত বৃক্ষ রোপণে এগিয়ে আসা।পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তুলতে গাছের বিকল্প নেই।

IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম : দিনাজপুর।