পরীমনি প্রতিভাবান শিল্পী, প্রতিবাদী বলেই লাঞ্ছিত হয়েছে
আপডেটঃ ৫:১৪ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
নিউজ ডেস্কঃ
মাদকের অপব্যবহার বাড়ার পেছনে রাষ্ট্রের নিরব ভূমিকা আছে।পরীমনিকে মাদকের মামলায় গ্রেফতার করে হেনস্তা করার কারণ তিনি প্রতিবাদী।অন্যায়ভাবে তাকে বারবার রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।আদালতের এই ধরনের সিদ্ধান্তের কারনে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারনা সৃষ্টিহয়।পরীমনির মতো অপরাধে অভিযুক্তদের বারবার রিমান্ডে নেয়া উচিত নয়।উচ্চ আদালত হস্তক্ষেপ না করলে তার জামিন হয়তো আরো বিলম্বিত হতো।বাংলাদেশ তালেবানী রাষ্ট্র নয় যে পরীমনিদের নিগৃহীত হতে হবে।বিনোদন ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে হয়তো পরীমনিকে বোট ক্লাবে যেতে হয়েছে।তা না হলে এদেশের শোবিজ পেশার সাথে যুক্তরাএই পেশায় টিকে থাকতে পারছে না।পরীমনির ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত।তবে পরীমনির পক্ষে জনমত তৈরি হওয়ায় ন্যায়বিচার নিয়ে আশাবাদি হওয়া যায়।
যদিও বর্তমানে জনমতের প্রতিফলন হওয়ার সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসছে।আজ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, শুক্রবার এফডিসিতে ‘বিনোদন জগতে মাদকের
অপব্যবহার বাড়ার কারণ’ নিয়ে ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট সমাজচিন্তক ও ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল
ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।অন্যদিকে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আটক বা গ্রেফতারের পর কাউকে অভিযুক্ত করে রাতের রাণী বা বিভিন্ন আপত্তিকর উপাধি দেওয়া মোটেই সঠিক নয়।বিচারের আগেই রায়ের মতো স্টেটমেন্ট দিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করে কারো ব্যক্তিগত সম্মানহানি করা উচিত নয়।
যা ঘটেছে চিত্রনায়িকা পরীমনির ক্ষেত্রে।অথচ বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে কাউকে নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর দন্ড বা এরূপ কোন আচরণ করা যাবেনা।পরীমনির বাসায় মদ বা মাদক পাওয়ার অভিযোগ যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে কিভাবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তা তার বাসায় গেলো।কারা এর পৃষ্টপোষক।কাদের কারণে পরীমনির আজ এই অবস্থা।
পিয়াসার বা মৌ’দের উত্থানের পিছনে কোন রাতের রাজারা বেনিফিশিয়ারী।সেই প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করেআইনের মুখোমুখী করা হলে প্রশাসনের প্রতি জনগনের আস্থা বাড়বে।তবে যারা নাটক, সিনেমা, মডেল বা অভিনয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেতথাকথিত শিল্পী বনে গিয়ে অপকর্ম করে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
ভালো স্ক্রীপ্ট, এডিটিং, ডাবিং সহ উন্নত নির্মাণশৈলীর মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রের স্বর্ণালী দিন ফিরিয়ে আনা আবশ্যক।ঘর বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত টেলিভিশনে ভালো নাটক,বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান তৈরি করে বিদেশী ডাবিংকৃত সিরিয়াল বন্ধ করতে হবে।তা না হলে মেধাবী ও সৃজনশীল অভিনেতা-অভীনেত্রীরা এপেশায় টিকে থাকতে পারবে না।
যার ফলে বিনোদন জগতে মাদকের অপব্যবহার বৃদ্ধি সহ তৈরি হতে পারে নানা প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা।অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন আমাদের সমাজে নারীরা নিরাপত্তাহীন।সমাজের পুরুষ-তান্ত্রিকতা এবং অর্থের কাছে আত্ম-সমর্পণ একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে।পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে পণ্যে পরিণত করে।এ দেশেও তাই হচ্ছে।
সমাজে সৃজনশীলতা ক্রমশ মূল্যহীন হয়ে যাচ্ছে।সামাজিক পরিবর্তন ব্যতিত এই অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।করোনার মতো দুর্যোগকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর লোক ধনী হচ্ছে অন্যদিকে ব্যপক সংখ্যক লোক দারিদ্রসীমার নিচে চলে যাচ্ছে।সরকারের পক্ষ থেকে মিডিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির কথা বলে গণ-মাধ্যমের স্বাধীনতা প্রমাণের চেষ্টা করা হলেও প্রকৃতপক্ষে মিডিয়া স্বাধীন নয়।
সরকার এবং মালিকপক্ষের স্বার্থের অনুকূলে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা হচ্ছে।বর্তমানে গণ-মাধ্যমের সংবাদ পরিবেশনের প্রধান উৎস হচ্ছে অপরাধ জগতের খবর।রাজনৈতিক সংবাদ ক্রমশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে।সাংবাদিকরা অনুসন্ধান করে যেসব তথ্য সংগ্রহ করে মালিকপক্ষর স্বার্থের পরিপন্থি হলে তা আলোর মুখ দেখে না।
প্রতিযোগিতায় সরকারি বাঙলা কলেজকে পরাজিত করে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন- উন্নয়নকর্মী ড. এস এম মোর্শেদ, নিশাত সুলতানা, সাংবাদিক আব্দুল্লাহ তুহিন, ড. সাকিলা জেসমিন ও নাদিয়া শারমিন।
ক্যাপশন ০১: বিনোদন জগতে মাদকের অপব্যবহার বাড়ার কারণ নিয়ে ছায়া সংসদের চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি প্রদান করছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ক্যাপশন ০২: বিনোদন জগতে মাদকের অপব্যবহার বাড়ার কারণ নিয়ে ছায়া সংসদে অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ সহ অন্যান্যদের সাথে বিজয়ী বিতার্কিকদের দেখা যাচ্ছে।
IPCS News Report : Dhaka: মো. আবুল বাশার, কো-অর্ডিনেটর, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।