পরিছন্ন নগরী খ্যাত রাজশাহীর ফুটপাতে মল-মূত্রত্যাগ, দুর্গন্ধে নাকাল পথচারী
আপডেটঃ ৩:১২ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৬, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:- পরিছন্ন নগরী খ্যাত রাজশাহী মহানগরী যেন আলোর নীচে অন্ধকারের মত।আলোকাজ্জ্বল রঙ্গিন সড়কবাতির নীচের ব্যাস্ততম সড়কের ফুটপাতেই চলছে মলমূত্র ত্যাগ।ফুটপাত নয়! যেন গনশৌচার।বলছিলাম রাজশাহী মহানগরীর ব্যাস্ততম এলাকা শিরোইল বাস টার্মিনালের সমনের ফুটপাতের হালচাল।রাস্তাটির উত্তরপাশে ঝকঝকে রেলওয়ে স্টেশন,দক্ষিনে আন্তঃজেলা বাসটার্মিনাল,পশ্চিমে ঢাকা বাস কাউন্টার।রেল স্টেশনের দেয়ালঘেঁষে ফুটপাতজুড়ে প্রতিদিন মল-মূত্র ত্যাগ করছেন স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরাও।
ফলে অসহনীয় দুর্গন্ধ ভেসে আসে, যা চলাচলকারী সাধারণ মানুষদের জন্য দুর্বিষহ এক অভিজ্ঞতা।পথচারীদের মতে, স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি এটি একটি সভ্য নগরের পরিচয়ে প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।ফুটপাতের পাশে জমে আছে আবর্জনা।পরিষ্কার করার কোনও লক্ষণ নেই।প্রচণ্ড রোদে এই ধুলোময় পরিবেশে নিশ্বাস নেওয়াও কঠিন।অনেকেই মুখে কাপড় বেঁধেপার হচ্ছে এলাকাটি।
নিয়মিত পথচারী মীরা রহমান বলেন, ‘ফুটপাতে প্রস্রাবের গন্ধে হাঁটা যায় না, হকারদের জন্যও চলাচল করা কঠিন।এটা কোনও নগরের চিত্র হতে পারে না।রেল স্টেশন ও রাজশাহী বাসটার্মিনালের ফুটপাতটি ব্যবহ্রত হচ্চছে অঘোষিত পাবলিক টয়লেট হিসেবে।যা স্থানীয় ও পথচারীদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাসটার্মিনাল ও রেলস্টেশনে যাত্রী ওঠানামার গুরুত্বপূর্ণ রাস্থাটির ফুট হওয়া সত্ত্বেও রক্ষানাবেক্ষন ও দেখভালের অবহেলায় অযত্নে এই ফুটপাতটি এখন মলমূত্রে নোংরা ও দূর্গন্ধে নাভিশ্বাসে উঠেছে পথচারিরা।নগরির অন্যান্য রাস্তার ফুটপাত গুলোরমত রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম প্রবেশদ্বার থেকে পূর্বের রেলওয়ে থানা পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিলো রাস্তার ফুটপাতটির অর্ধেক ব্যবসায়ীদের দখলে।
বাকি অর্ধেক বাস ও ট্রেনের যাত্রীদের মলমূত্র ত্যাগের ভাগাড়ে পরিনত।রিক্সা ও অটোচালক, বাস টার্মিনালের শ্রমিক,ফুটপাত ব্যবসায়ী ও পথচারীদে মলমূত্রে রাস্তাটি ও এর ফটপাত চলাচল দূর্ভোগে পরে পথচারীরা।এছাড়া ফুটপাত গড়ীয়ে মেইন রাস্তাটি মুত্রেের পানি জমে থাকে, এতে পথচারীদের চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
হালিমা বেগম নামের এক পথচারী বলেন, আমরা ট্রেন থেকে নেমে বাসায় যাওয়ার এই পথে ফুটপাতে হাঁটতে পারি না।বাধ্য হয়ে রাস্তার ওপর দিয়ে হাঁটতে হয়, যা খুবই বিপজ্জনক।গাড়ির চাপের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে গিয়ে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, প্রতিদিন সকাল-বিকেল এখানে মানুষ প্রস্রাব করার ফলে ফুটপাতও।
দুর্গন্ধের কারণে এ পথে হাটার সময়ে অনেকে বমি করে।অথচ প্রশাসনের কোনো নজর নেই।অনেক ট্রেনযাত্রী অভিযোগ করেছেন, স্টেশনের পাবলিক টয়লেটের অপর্যাপ্ততা এবং অপরিষ্কার অবস্থার কারণেই অনেকে ফুটপাতকেই বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছেন।ফলে, রেল স্টেশন ও বাস টার্মিনালের আশপাশে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট না থাকায় অনেকেই যেখানে-সেখানে প্রস্রাব করতে বাধ্য হচ্ছে।
তবে এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।এছাড়া দৃষ্টিকটুর পাশাপাশি রোগবালাই ছড়াচ্ছে।রেলকতৃপক্ষ বলছে, স্টেশনের বাইরের ফুটফাত সম্পুর্ন সিটি করপোরেশনের আওতায়।এ বিষয়ে তাদের কছু করার নাই।রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মামুন ডলার বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক যে শহরের ব্যস্ততম এলাকায় এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটের পদ শূন্য রয়েছে, তবে নতুন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে লোকবলের তুলনায় তুলনায় পাবলিক টয়লেট অপর্যাপ্ত।এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন পাবলিক টয়লেট নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, নিয়মিত নজরদারি, যথাযথ আইন প্রয়োগ এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক পাবলিক টয়লেট স্থাপন জরুরি।প্রশাসনের উচিত জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে পথচারীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারেন এবং শহরের সৌন্দর্য রক্ষা হয়।রাজশাহী রেল স্টেশনের ফুটপাতকে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করতে হলে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
রাজশাহী সিটিকর্পোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে নাগরিক দুর্ভোগ আরো বাড়বে এবং শহরের পরিবেশ হতে থাকবে আরো দূষিত
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।