শনিবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

নেত্রকোণায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে হেফাজত নেতার বাড়িতে হামলা ও মারধরের অভিযোগ

আপডেটঃ ২:০৫ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ১৪, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

নেত্রকোনা:- নেত্রকোনায় চাঁদা না দেওয়ায় মাদ্রাসা সুপারকে মারধর করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম।শুক্রবার বিকেলে নেত্রকোনা সদর উপজেলার হাটখলা বাজারে মৌগাতী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রেনু মিয়া ও তার লোকজনকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।

আবুল কালাম আজাদ রেনু মিয়া নেত্রকোনা সদর উপজেলার মৌগাতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।আর ভুক্তভোগী মাওলানা আনিসুর রহমান একই ইউনিয়নের হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বড় গরদী বাগানবাড়ী মসজিদের ইমাম।হেফাজত নেতার বাড়িতে হামলার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার বিকেলে হাটখলা বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম।

এ সময় বক্তব্য রাখেন-হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ আবদুল কাইয়ুম, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মাদানী,জেলা শাখার যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসাইন প্রমুখ।বক্তারা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান।

তা না হলে পরে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।এ ঘটনায় জেলা বিএনপি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।তবে আবুল কালাম আজাদ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,নেত্রকোনা সদর উপজেলার গরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে আবুল কালুম আজাদের সাথে ওই মাদ্রাসার সুপারের বিরোধের সৃষ্টি হয়।

গরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুল খালেক খানকে গত মঙ্গলবার দুপুরে মৌগাতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রেনু মিয়ার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মেরে অফিস থেকে বের করে দেয়।এর প্রতিবাদ করেন অত্র ইউনিয়নের হেফাজতে ইসলামের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান।

প্রতিবাদ করায় মঙ্গলবার আবুল কালাম আজাদের লোকজন আনিসুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসত ঘর ভাঙচুর করে।আনিসুর রহমানকে ডেকে নিয়ে বেধরক মারপিট করে।এরই প্রতিবাদে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে গত তিনদিন ধরে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

এ সময় বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে তারা।এলাকাবাসী জানান,গত আওয়ামীলীগ আমলে আলেমদের উপরে পুলিশী হয়রানি হলেও বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেনি।কিন্তু ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে আলেমদের বাড়ি ঘরে হামলার ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ও দলীয়ভাবে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ সময় তারা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেন।এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।ইতিমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।মৌগাতী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রেনু মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি বা আমার লোকজন কারো বাড়িতে হামলা,ভাঙচুর ও মারধর করেনি।

পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এ সব করা হচ্ছে।আমাকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে।আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য তারা এসব করছে।নেত্রকোনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বজলুর রহমান পাঠান ও এসএম মনিরুজ্জামান দুদুসহ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।কমিটির সদস্য এসএম মনিরুজ্জামান দুদু বলেন,আমরা বিষয়টি তদন্ত করে জেলা কমিটির কাছে রিপোর্ট পেশ করব।

তদন্তের পর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা যাবে। নেত্রকোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ জানান,গরদী মাদ্রাসার সুপার আবদুল খালেক খানকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার কথা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।এ ব্যাপারে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া একই ঘটনায় অপর একজন শিক্ষকের বাড়ি ঘরে হামলার ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

IPCS News : Dhaka : শহীদুল ইসলাম : নেত্রকোনা।