নদী দখল করে চলছে বিশালাকার পুকুর খনন।
আপডেটঃ ৪:২০ অপরাহ্ণ | মে ১১, ২০২২
নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:- রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামে আয়চাঁন নদী দখল করে ৪টি স্থানে বাঁধ দিয়ে চলছে পুকুর খননের মহোৎসব।নদী রক্ষায় স্থানীয় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনকে অভিযোগ দেওয়া হলেও পুকুর খনন বন্ধ হয়নি।স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাপটে নদী দখল করে পুকুর খনন চলছেই।এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মাঝে।অভিযোগ উঠেছে, ওই এলাকার সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল আলম এবং মোয়াজ্জেম হোসেন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নদী দখল (কাস জমি) করে ৪টি স্থানে বাঁধ দিয়ে দুটি বিশাল আকারের পুকুর খনন করছেন।প্রায় ২০০ বিঘা জমি দখল করে ওই পুকুর খনন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ৪টি স্কেভেটর মেশিন।ওই মেশিন দিয়ে দিনরাত নদী খনন করে বাঁধ দিয়ে পুকুর খনন কাজ চলছে। মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে একই দৃশ্য দেখা গেছে।
এদিকে এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা ও সহকারী কমশিনার (ভূমি) শুভ দেবনাথ ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুকুর খননের নির্দেশ দিয়ে আসেন।কিন্তু তার পরেও সে কাজ বন্ধ হয়নি।
স্থানীয় এলাকাবাসী সুকচাঁন মিঞা, আকবর আলীসহ আরও অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই একেবারে নদী দখল করে পুকুর খনন করা হচ্ছে।এই নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুর খননের ফলেনদীর পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে।আশে-পাশের অন্তত ২০ টা বিলের পানি নামতে পারবে না নদীতে।
এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে অকেজো হয়ে যাবে হাজার হাজার বিঘা জমি।এছাড়াও আশে-পাশের অন্তত ৭টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বর্ষাকালে পানিবন্দি হয়ে পড়বেন।এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এর আগে ২০২০ সালের জুন মাসে শাসসুল আলম আয়চাঁন নদী দখল করে বাঁধ দিয়ে পুকুর খনন করতে গিয়ে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসীন মৃধা সেটি বন্ধ করে দেন।
সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে স্থানীয় জনসাধারণের পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে নোটিশ করা হয়।ওই সময় ৭ দিনের মধ্যে সরকারি সম্পত্তি দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য নোটিশ করা হয়।পরে নদী দখল থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন সেই ভূমিদস্যরা।তবে গত ৬ মে থেকে আবারও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আয়েচাঁন নদী দখল করে শুরু হয়েছে পুকুর খনন।
দেবীপুর গ্রামের কৃষক মমিন উদ্দিন বলেন, নদী দখল করে পুকুর খনন করায় আমার ধানি জমি পানিবন্দি হয়ে পড়বে।এমনকি পুকুরের উঁচু ভিটা জমি ভেঙ্গে পুকরে চলে যাবে।আমি এ নিয়ে অভিযোগ করেছি।কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।নামদোর খালি গ্রামের আলতাফ হোসেন বলেন, বর্ষাকালে আমাদের গ্রামসহ আশে পাশের কয়েকটি গ্রামের পানি এই নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়।
বর্তমানে নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুর খনন করার ফলে আমাদের বাড়ির উঠানে পানি উঠবে।ঘরেও ঢুকতে পারে পানি।এবিষয়ে নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুর খননকারী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর শাসমুল আলম বলেন, জনগনের যাতে ক্ষতি না হয়, সেই ব্যবস্থা রেখেই আমরা পুকুর খনন করছি।এছাড়াও ইউএনও সাহেব যায়গা পরিদর্শন করেও গেছেন।
আমরা আমাদের জমিতে পুকুরেই খনন করছি।তবে দেবীপুর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি জনগণের স্বার্থে নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি।তাতে কোনোই লাভ হয়নি।হাজার হাজার মানুষের ক্ষতি করে সুইচগেটের পানি প্রবাহের পথ বন্ধকরে দিব্বি চলছে পুকুর খনন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানা বলেন, নদী দখল পুকুর খনন বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সেটি মানা না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।প্রয়োজেন অভিযান চালানো হবে।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।