দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে টিকিট দুর্নীতি ও আর্থিক গড়মিলের অভিযোগ
আপডেটঃ ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ | ডিসেম্বর ০৪, ২০২৪
নিউজ ডেস্কঃ
দিনাজপুর:- দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন অতিরিক্ত দায়িত্বে (ভারপ্রাপ্ত) সুপারিনটেনডেন্ট, এ বি এম জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে টিকিট বিক্রি ও রাজস্ব আয়ের পরিসংখ্যান নিয়ে চাঞ্চল্যকর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য এবং আর্থিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রকৃত টিকিট বিক্রির পরিসংখ্যান এবং আয়ের রিপোর্টে বড় ধরনের গড়মিল রয়েছে, যা সরাসরি দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়।
স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের রাজস্ব আয়ের পরিসংখ্যান ২০২৪-২৫ অর্থবছর (চলতি বছর) অক্টোবর মাসে আয়: ২ কোটি ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকা লক্ষ্যমাত্রা: ২ কোটি ৪ লাখ ৯২ হাজার ১১১ টাকা, অতিরিক্ত আয়: ২১ লাখ ৪২ হাজার ৬৩৬ টাকা, গত চার মাসের (জুলাই-অক্টোবর) আয়: ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫৭ টাকা, বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা: ২৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছর (প‚র্ববর্তী বছর): মোট রাজস্ব আয়: ২০ কোটি ২৫ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭০ টাকা, টিকিট বিক্রি থেকে আয়: ১৯ কোটি ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ২৪৮ টাকা, মালামাল তোলা ও খালাস থেকে আয়: ১ কোটি ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫২২ টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছর: মোট রাজস্ব আয়: ২১ কোটি ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৩১ টাকা, টিকিট বিক্রি থেকে আয়: ১৯ কোটি ২৮ লাখ ১০ হাজার ৬৮৩ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছর: মোট রাজস্ব আয়: ১৬ কোটি ৬৯ লাখ ৮ হাজার ১৪৭ টাকা, টিকিট বিক্রি থেকে আয়: ১৫ কোটি ৫০ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪০ টাকা, অক্টোবর ২০২৪ মাসে টিকিট বিক্রির পরিসংখ্যান: যাত্রীর সংখ্যা: ৬৯ হাজার ৮০ জন।
গত অক্টোবর ২০২৪ মাসের টিকিট বিক্রির গড়মিল! বরাদ্দকৃত টিকিট: ১,১১,২৭০টি।বিক্রির দাবি: ৬৯,০৮০টি।এই হিসাবে গায়েব টিকিট: ৪২,১৯০ টি।এই টিকিটের হিসাব মেলানো যায়নি।এটি কালোবাজারি বা অন্য কোনো অনৈতিক উপায়ে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।অক্টোবর ২০২৪ দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে আয় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ কোটি ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা।অথচ আয় দেখানো হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকা। অতিরিক্ত দেখানো আয়: ২১ লাখ ৪২ হাজার ৬৩৬ টাকা।
মালামাল খালাসের আয়ের সঙ্গে টিকিট বিক্রির আয় মিশ্রিত করে এই মিথ্যা রাজস্ব দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। তবুও ওই সময় আয় দেখানো হয়েছে ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫৭ টাকা, যা সম্প‚র্ণ অবাস্তব।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ বি এম জিয়াউর রহমান বগুড়া জেলার সুখান পুকুর স্টেশন মাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, স্বৈরাচার খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগের দসর হওয়ার সুবাদে আওয়ামী পরিবারের সদস্য হওয়ায় আজ থেকে ৮ বছর আগে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন সুপারিন্টেনডেন্ট না থাকায় জিয়াউর রহমানকে অতিরিক্ত দায়িত্বে ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টেনডেন্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়, ৩ বছর অন্তর বদলির বিধান থাকলেও রেলওয়ে বিধান না মেনেই তাকে রাখা হয়েছে, আজও পর্যন্ত দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন প্রকৃত সুপারিন্টেনডেন্ট খুঁজেই পাননি রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
বিগত ৮ বছর ধরে জিয়াউর রহমান এর বিরুদ্ধে দিনাজপুরের স্থানীয় পত্রিকা এবং ঢাকার পত্রিকায় সরকারি রাজস্ব ক্ষতি ও বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।গত ২৫ নভেম্বর ২০২৪ সোমবার দিনাজপুরের স্থানীয় পত্রিকায় দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে বেড়েছে রাজস্ব আয় শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করান এ বি এম জিয়াউর রহমান, এ নিয়ে রেল পাড়ায় সর্বত্র গুঞ্জন চলছে তারা বলছেন কোন অন্যায় অপকর্ম ঢাকতে অথবা কোন কিছু হাসিল করতেই এমন মুখরোচক সংবাদ পরিবেশন করিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টেনডেন্ট এ বি এম জিয়াউর রহমানকে টিকিট দুর্নীতি ও আর্থিক গড়মিলের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।সুধী ও সচেতন মহল বলেন, (কোর্চিং ব্যালেন্স শিট-গুডস ব্যালেন্স শিট) এবং ব্যাংক খতিয়ে দেখলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী পশ্চিম অর্থ উপদেষ্টা প্রধান হিসাব কর্মকর্তা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজার এন্ড চিফ অ্যাকাউন্ট অফিসার (এফ.এ.এন্ড সি.এ.ও) কে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও এ কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।
IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম: দিনাজপুর।