দিনাজপুরে ইউপি চেয়ারম্যান, এবং সদস্যের বিরুদ্ধে ইজিপিপি প্রকল্প, এবং পুকুর ঘাট মেরামতের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ।
আপডেটঃ ৭:২৭ অপরাহ্ণ | মে ৩০, ২০২৩
নিউজ ডেস্কঃ
দিনাজপুর:- দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯নং আস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দীক, ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ এবং মহিলা সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য জাকিয়া সুলতানা চন্দনের বিরুদ্ধে ইজিপিপি প্রকল্প এবং পুকুর ঘাট সংস্কারের অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন অত্র ইউনিয়নের একাধিক কৃষক।দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯ নং আস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ আবু বকর ছিদ্দীক অতি-দরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) নন-ওয়েজ প্রকল্প ২০২২/২০২৩ অর্থবছরের প্রথম পর্যায়ে আস্করপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর খাড়ির উপর আব্দুর রশিদের জমি সংলগ্ন কালভার্ট নির্মাণের জন্য সরকারি ভাবে বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করে চুনিয়াখাঁড়ি কালভার্ট সংস্কারের করে।
একই এলাকার হাসলা পুকুর তৈরিকৃত কালভার্ট এর যৎসামান্য সংস্কার করে প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থের বেশী ভাগই আবু বকর ছিদ্দীক ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রশিদ যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করেন।
দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়েরের সূত্র ধরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আব্দুর রশিদের জমির উপর দিয়ে স্থাপিত ভগ্নদশা ও বেহাল অবস্থার কালভার্টটির সংস্কারের কোন কাজই করা হয়নি।এর ফলে অত্র ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কৃষকদের পড়তে হয় বিপাকে।
দীর্ঘদিনের এই ভগ্নদশা ও চলাচলের অনুপযোগী কালভার্টটির কারণে কৃষকদের ধান কাটা,মারাইয়ে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।এমনকি ধান কাটতে এবং বহন করতে স্বাভাবিক বাজার মূল্যের চেয়ে বিঘা প্রতি ৬হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়।
অথচ বিঘা প্রতি যেখানে ধান কাটতে ব্যয় হয় ৩ হাজার ৫শত টাকা থেকে ৪ হাজার বলে জানান স্থানীয় একাধিক কৃষক।এছাড়াও ভুক্তভোগী কৃষকেরা বলেন-সরকার আমাদের দুর্ভোগ ও কৃষিক্ষেত্র ব্যয় ভার লাঘবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের কারণে কৃষকদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ।
উক্ত এলাকার প্রান্তিক পর্যায়ের একাধিক কৃষকের দাবি গৌরিপুর এলাকার চুনিয়াখাঁড়ির উপর কালভার্টটি নির্মিত হলে তাদের কৃষিক্ষেত্রে ব্যয় অনেকাংশ লাঘব পাবে এবং যাতায়াতে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবে।
স্থানীয় কয়েক জনের সাথে কথা হলে তারা জানান, যে আব্দুর রশিদের জমির উপর দিয়ে কালভার্টের জন্য ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে ওই বরাদ্দ কৃত টাকা ইউপির চেয়ারম্যান সহ মেম্বার প্রতিনিধিরা মিলে একটি পুরাতন কালভার্ট সংস্কারের কাজে লাগান, ৯নং আস্করপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড গৌরিপুর এলাকার ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন দপ্তরে দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখে আস্করপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের জমি সংলগ্ন একটি কালভার্ট নির্মাণ কাজের জন্য সরকারি ভাবে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
আস্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব আবু বকর ছিদ্দীক উক্ত টাকা উত্তোলন করার পরেও অদ্যাবধি ভাবে উক্ত কালভার্টের নির্মাণ কাজ না করে বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এবং মহিলা সংরক্ষিত আসনের ১,২ও ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাকিয়া সুলতানা চন্দন স্বরস্বত্তীপুর তারনী পুকুর ঘাটের মেরামত কাজের জন্য ২০২২-২৩অর্থবছরের বরাদ্দকৃত অর্থ ১ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে পুকুরঘাট সংস্কার না করে নিজ হেফাজতে রেখে সমুদয় অর্থ আত্মসাতের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইউপি মহিলা সদস্য জাকিয়া সুলতানা চন্দনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি দেখা না করে মুঠোফোনে বলেন পুকুরঘাট নির্মাণে বরাদ্দকৃত অর্থবছর শেষ হওয়ার আগে করলেই হলো।আমিতো আর ১ লাখ টাকা মেরে বড়লোক হবো না।
জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের বিশেষ খাত থেকে পুকুর ঘাট নির্মাণে বরাদ্দকৃত ১লক্ষ টাকা কাজে না লাগিয়ে নিজ হেফাজতে রাখার বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন আমি বরাদ্দকৃত অর্থতো হজম করে দেয়নি,রক্ষিত আছে অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই কাজ করলেই হলো।
এ বিষয়ে ৯ নং আস্করপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবু বক্কর ছিদ্দীক এর সাথে কথা বললে তিনি জানান।আমি রেজুলেশন করে ছেড়ে দিয়েছি আব্দুর রশিদের জমির উপর দিয়ে যে কালভার্ট হওয়ার কথা ছিল সেটা হয়ে গেছে।আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা আব্দুর রশিদ ও মহিলা ইউপির সদস্য জাকিয়া সুলতানা চন্দন,তারা একটা কমিটি করে কাজ সম্পন্ন করেছেন বলে জানান চেয়ারম্যান।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দীন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ১লক্ষ ৯০ হাজার টাকা রেজুলেশন করেই হাজরাপুকুর কালভার্ট মেরামতের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।৯ নং আস্করপুর ইউনিয়নের রাজনৈতিক কতিপয় ব্যক্তির পারস্পরিক বিরোধকে কেন্দ্র করে শত্রুতার জের ধরে অহেতুক অভিযোগ দিচ্ছে।
যেই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।এভাবে নয়,ছয়,বুঝিয়ে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষক ও ৯ নং আস্করপুর ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা।
IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম : দিনাজপুর।