সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

ট্রেনের ভেতর বরযাত্রীদের ওপর শিক্ষার্থীদের হামলা, আটককৃতরা শিক্ষার্থী হওয়ায় ছেড়ে দিলো পুলিশ

আপডেটঃ ১২:২৪ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪

নিউজ ডেস্কঃ

ঈশ্বর্দী থেকে রাজশাহী গামি চলন্ত কমিউটার ট্রেনের ভেতরে বরযাত্রীদের ওপরে দু দফায় হামলা করেছেন একদল ছাত্র।এ সময় জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে বরযাত্রীদের কয়েকজনের জনের হাত ও পা ভেঙে দিয়েছেন তাঁরা।এছাড় তাদের  কাছে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করার কথা জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল সোয়া আটটায় জেলার আড়ানী স্টেশনে  কমিউটারথেকে ট্রেনে উঠেছিলেন ওই বরযাত্রীরা।তাঁরা গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটে যাচ্ছিলেন।রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে নামার পর হামলাকারীদের একজনকে আটক করে পুলিশে দেন রাজশাহী স্টেশনে কর্মরত আনসার সদস্যরা।আটক ছাত্র (১৭) নগরের আসাম কলোনি বউবাজার এলাকার বাসিন্দা।সে নগরের ইউসেপ স্কুলে পড়ে।তার সঙ্গে হামলায় মনির (২৪), মাইনুল (২৬) নামের দুই বড় ভাইসহ কিশোর বয়সী আরও কয়েকজন ছাত্র ছিল।মনির ও মাইনুল ছাড়া সবাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।আহত বরযাত্রী আরিফুল ইসলামের (২৮) বাড়ি জেলার বাঘা উপজেলার আড়ানী ননুনগর গ্রামে।

বাঁচার জন্য তিনি রাজশাহী স্টেশনে নেমে দৌড় দিয়েছিলেন।তাঁকে জিআই পাইপ ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে ডান হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে।পিঠে স্ট্যাম্পের দাগ বসে গেছে।ট্রেনের ভেতরে ডিটল সরকার নামে আরেকজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে।তিনি ওই ট্রেনেই কাঁকনহাট চলে গেছেন।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহী রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা হাত নিয়ে আরিফুল কাতরাচ্ছেন।সঙ্গে থাকা বরযাত্রী নিশান আলী স্টেশনের একটি দোকানের রেফ্রিজারেটর থেকে বরফ এনে লাগাচ্ছেন।আরিফুল ইসলাম বলেন, তাঁরা আড়ানী থেকে ৩০ জন বরযাত্রী ট্রেনে উঠেছিলেন।ট্রেনের ওঠার পরে ওই দলের সঙ্গে দেখা হয়।

তাঁরা কার সঙ্গে যেন ঝামেলা করছিলেন।একপর্যায়ে তাঁর মাথায় একটা গুঁতা লাগলে তাঁর সঙ্গের লোকজন ধাক্কা দিয়ে ছাড়িয়ে নেন।এরপর তারা তাঁদের (বরযাত্রীদের) মারধর শুরু করেন।এ সময় ডিটল সরকারকে মেরে ২০ হাজার টাকা ও মুঠোফোন কেড়ে নেন।এছাড়া বরযাত্রী এক মহিলার গলায় থাকা স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়।

তিনি আরো বলেন, বিপদ দেখে কৌশলে সরদহ স্টেশনে বরসহ তিনজন নেমে সড়ক পথে কাঁকনহাটের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।রাজশাহী স্টেশনে নেমে তিনি দৌড়ে একজন আনসার সদস্যকে জড়িয়ে ধরে বলেন, আমাকে বাঁচান।ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পত্রিকার হকার কাজল (৬০)।তিনি বলেন, তারা মারছে আর বলছে, এই বড় ভাইদের ডাক দে।

আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী রাজশাহী প্রাইভেট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক শেখ মো. সাকিব বলেন, তিনি দেখেছেন, আরিফুল ট্রেন থেকে নেমে দৌড়াচ্ছেন।তার পেছনে নিশানকে মারতে মারতে আসছেন এক হামলাকারী।স্থানীয় লোকজন ঘিরে ধরলে তাঁরা পালিয়ে যান।যাওয়ার সময় জিআই পাইপটি ফেলে যান।

মারার কারণে স্ট্যাম্পটি ভেঙে দুই টুকরা হয়ে যায়।পুলিশ এগুলো জব্দ করেছে।প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, আগে থেকেই খবর পেয়ে ছাত্রদের কয়েকজন বড় ভাই জিআই পাইপ, স্ট্যাম্প ও লাটিসোঁটা নিয়ে রাজশাহী স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন।ট্রেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা আরিফুল ও নিশানের ওপর হামলা করেন।

আটক হামলাকারী ছাত্র স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানোর কথা স্বীকার করেছেন।সকালে আড়ানী স্টেশনে কেন গিয়েছিলেন, জানতে চাইলে তিনি জানান, তাঁরা ১০-১২ জন মিলে সকালে তিতুমীর ট্রেনে রাজশাহী থেকে আবদুলপুর স্টেশনে লুচি খেতে গিয়েছিল।সেখান থেকে কমিউটার ট্রেনে ফিরছিল।আড়ানী স্টেশনে এসে বরযাত্রীর একজনের সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা হয়।তারপর এ ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী রেলস্টেশনের মাস্টার আবদুল মালেক জানান, আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে আটক হামলাকারীকে রেলওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছ।রাজশাহী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল কর্মকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর দুইজন সদস্য ছিলেন।আটকৃত ছাত্র হওয়ায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ না দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ রাজশাহী।