ট্রেনের টিকিট বিক্রির অব্যবস্থাপনায় দুর্ভোগ, প্রতিবাদ করায় টিকিট প্রত্যাশীদের নির্যাতন
আপডেটঃ ৪:১৫ অপরাহ্ণ | মার্চ ২১, ২০২২
নিউজ ডেস্কঃ
রেলের টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা প্রতিষ্ঠান সিএনএসের মেয়াদ শেষ হওয়ায়।আগামী ২৬ মার্চ টিকিট বিক্রির দায়িত্ব নেবে নতুন প্রতিষ্ঠান।তাই রোববার (২০ মার্চ) থেকে অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে।ফলে স্টেশনে কাউন্টার থেকেও কম্পিউটারের মাধ্যমে দেওয়া যাচ্ছে না টিকিট।বুকিং সহকারীদের টিকিট বেচতে হচ্ছে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে।এভাবে টিকিট বিক্রি করতে সময় লাগছে বেশি।ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট প্রত্যাশী যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এক টিকেট প্রত্যাশীতকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত যাত্রীদের এই ভোগান্তি পোহাতে হবে।তবে অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধের প্রথম দিনই রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।ঘটেছে হাতাহাতির ঘটনাও।
স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীরা টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন।সবচেয়ে বড় লাইন দেখা গেছে এসি টিকিটের জন্য।টিকিট প্রত্যাশীরা অভিযোগ করেন, কাউন্টারে বুকিং সহকারীদের হাত চলছে না।ফলে টিকিট পেতে সময় লাগছে বেশি।সোমবারও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে দেখা গেছে একই চিত্র।টিকিট কাউন্টারে ছিলো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ও দীর্ঘ লাইন।তবে কতৃপক্ষের তদারকিতে কোনো বিশৃঙ্খলা খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপ অসীম কুমার তালুকদার জানান, ‘ম্যানুয়ালি টিকিট হাতে লিখতে হচ্ছে।ফলে সময় একটু বেশি লাগছে।টিকিট দিতে সময় বেশি লাগার কারণে যেন ভিড় বেশি না হয় তার জন্য আমাদের উদ্যোগ আছে।ট্রেনওয়াইজ আমরা কাউন্টারগুলো ভাগ করেছি।কিছু ব্যানার টাঙিয়ে সেটি বলে দেওয়া হয়েছে।কাল থেকে যে কাউন্টারে ভিড় কম থাকবে সেখান থেকেই টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থা করব, যেন কেউ কষ্ট না পায়।’
রোববার স্টেশনের এক নম্বর কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মারুফ হোসেন।তিনি জানান, চার ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর তিনি কাউন্টারের সামনে আসতে পেরেছেন।সকাল ৭টায় তিনি টিকিটের জন্য এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।আবদুর রহমান নামে এক যাত্রী অভিযোগ করেন, অনেকে লাইন না ধরেও টিকিট নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
লাইনে না দাঁড়িয়েও টিকিট নিয়ে যাওয়া দেখে স্টেশনে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) এক সদস্যের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন নাজমুল হক নামের এক যুবক।আরএনবির দাবি, নাজমুল তাদের এক সহকারী উপ-পরিদর্শককে (এএসআই) চড় মেরেছেন।বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর আরএনবি সদস্যরা নাজমুলকে লাইন থেকে বের করে ধরে নিয়ে যান তাদের অফিসে।টানা হেঁচড়ায় নাজমুলের পরনের গেঞ্জি ছিড়ে যায়।
তাঁকে রক্ষায় এগিয়ে এলে আরেক যুবককেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।পরে মুচলেকা আদায়ের পর নাজমুলকে ছাড়া হয়।নাজমুলের দাবি, অনেকে লাইনে না দাঁড়িয়েও টিকিট নিয়ে যাচ্ছিলেন।তিনি আরএনবির কাছে এ অভিযোগ করেছিলেন।এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আরএনবির সদস্যই তাঁর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।তিনি কাউকেই চড় মারেননি।
জানতে চাইলে আরএনবির পশ্চিমাঞ্চলের চিফ কমান্ড্যান্ট আশাবুল ইসলাম বলেন, ‘যাত্রীরাই আমাদের কাছে বড়, তাদের সেবা দিতে হয়।কিছু কিছু সময় যাত্রীরা অপমানজনক কথা বলে।আমরা তাদের ধরে বোঝাই।নাজমুলকেও বিষয়টা বোঝানো হয়েছে।পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।এর মাধ্যমে তার নাম ঠিকানা নেওয়া হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে ডাকলে যেন তাকে পাওয়া যায়।’
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী।