সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

চলন্ত ট্রেনের কেবিনে ধর্ষণের চেষ্টায় মামলা ! অতঃপর

আপডেটঃ ১২:৫৫ অপরাহ্ণ | জুলাই ১০, ২০২৪

নিউজ ডেস্কঃ

দিনাজপুর:- বাংলাদেশ রেলওয়ে তার সংবিধানের নীতিমালা অনুযায়ী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে, রেলওয়ের রয়েছে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা, সংবিধানের ই এন্ড ডি রুল-ইফিসিএন সি-এন্ড ডিসিপিলিন রুল, দক্ষতা ও শৃঙ্খলা আইনে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিভাগীয় মামলা না হওয়ায়, বাধ্য হয়ে ন্যায় বিচারের আসায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা করছেন সুইটি পারভিন।মামলা সূত্রে জানা যায়, গত (৭ এপ্রিল ২০২৪) সকাল আনুমানিক ৯.৪৫ মিনিট সময়ে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নাটোর রেলওয়ে স্টেশনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেন পঞ্চগড় জেলার দেবিগঞ্জ থানার ধ্যান গ্রাম চৌধুরি পাড়া এলাকার মো. সুলতান আলির কন্যা সুইটি পারভিন, বর্তমানে রেলওয়ে স্টেশন দিনাজপুর ওয়েটিং রুম বেয়ারার (টিএলআর) পদে কর্মরত।

চলন্ত ট্রেনে সুইটি পারভিন, ফাঁকা সিটের জন্য বিভিন্ন বগি খোঁজাখুঁজি করাকালে ট্রেনের রানিং স্টাফ সুইটি পারভিনের পূর্ব পরিচিত মনোয়ারের সাথে দেখা হয়, তাকে অনুরোধ করলে বসার ব্যবস্থা করার জন্য বিভিন্ন কেবিন খোঁজাখুঁজি করে এক্সট্রা বগির এসি কেবিন নং-৪ সিট নং-২১-২৪ ফাঁকা সিট পেয়ে উক্ত কেবিনে বসে দরজা লক করার কথা বলে তিনি চলে যান।

সুইটি পারভিন কেবিনে প্রবেশ করেন এবং দরজা লক করে ভিতরে বসেন, আনুমানিক (১২.৪৫ মিনিট) সময়ে ট্রেনটি সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করলে, দরজায় নক করার শব্দ শুনতে পান, দরজা খুললে ট্রেনটির পরিচালক (গার্ড) বগুড়া জেলার নন্দি গ্রাম থানার দারিয়াপুর বর্তমান ঠিকানা দিনাজপুর পৌরসভাধীন বালুবাড়ী জোড়া ব্রিজের পাশে মনোয়ার হোসেন এর বাড়ির ৩য় তলার ভাড়াটিয়া মৃত আব্দুস সামাদ এর পুত্র সুমন ও (টিটিই) মঈনুল সুইটি পারভিনকে দেখে সরাসরি কেবিনে প্রবেশ করেন, এবং দুই জনই সিটে বসে পড়েন।

সুমন গার্ড জিজ্ঞাসা করে বলেন, সুইটি তুমি কোথায় যাইতেছ, উত্তরে সুইটি বলেন, নাটোরে আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছি।তারপর সুইটি তাদের দুইজনকেই বলেন, আমি বাহিরে চলে যাচ্ছি আপনারা বসেন, তখন টিটিই মঈনুল বলেন, সুইটি তুমি বসো আমরা বাহিরে যাই।একথা বলে টিটিই মঈনুল কেবিন থেকে বাহির হওয়া মাত্রই সুমন গার্ড কেবিনের দরজার ভেতর থেকে লোক করে দেয়।

সুইটি গার্ড সুমনকে দরজা লোক কেনো করলেন, জিজ্ঞাসা করলে বলেন, সুইটি তোমাকে দেখে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না।একথা বলার পরই সুমন গার্ড সুইটিকে কেবিনের দেওয়ালে চাপ দিয়ে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকে, সুইটি ভীত হয়ে দরজা খুলে দেওয়ার জন্য গার্ড সুমনের পা ধরে অনেক আকুতি-মিনতি করতে থাকে।

কিন্তু গার্ড সুমন সুইটির কোন কথা না শুনে সিটের উপর সওয়াইয়া ফেলে ঠোটে কামড়ে ধরে, তখন সুইটি তার মুখ থেকে মদ পানের গন্ধ পান, এক পর্যায়ে গার্ড সুমন সুইটির সেলোয়ারের ফিতা খুলে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করলে তখন সুইটি এবং সুমন গার্ডের ধস্তাধস্তি হয়, সুমন গার্ডকে ধাক্কা দিয়ে সিট থেকে নিচে ফেলে দিয়ে দ্রুত দরজা লোক খুলে কেবিন থেকে বাহির হন এবং কেবিনের করিডরে পরনের কাপড় ঠিক করে নেন সুইটি।

সুমন গার্ড সুইটির পেছনে পেছনে আসে এবং উক্ত ঘটনা কাউকেও যেন না বলা হয়, সে জন্যে বিভিন্ন ভয়ভীতিসহ মৃত্যুর হুমকি প্রদান করেন।এবং উক্ত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সুইটির হাতে ৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দিলে সুইটি উক্ত টাকাগুলি গ্রহণ না করে সুমন গার্ডের মুখে ছুড়ে মারেন।ইতিমধ্যে আনুমানিক ২ টায় ট্রেনটি নাটোর রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ করলে সুইটি স্টেশন প্লাটফর্মে নেমে পড়েন।

পরবর্তীতে বিষয়টি দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন (এস.এম) (গ্রেড-৩) সুখান পুকুর স্টেশন মাস্টার অতিরিক্ত দায়িত্বে (এস.এস) এবি.এম জিয়াউর রহমানকে ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়টি জানানো হয় এবং সুইটি তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় (৯) (৪) (খ)/১০- ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ চলন্ত ট্রেনের কেবিনের ভিতর ধর্ষণের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানি করার অপরাধে মামলা দায়ের করেন মামলা নং ০২ তাং- ২০/০৪/২০২৪।

দিনাজপুর রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে সুমন গার্ড মামলা হওয়ার পরে জামিনে রয়েছেন তাকে সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়েছে, রেলওয়ে সংবিধান অনুযায়ী বিভাগীয় বিচার ব্যবস্থা এখনও গ্রহণ করা হয়নি, ঘটনার পর থেকেই সুইটিকে মামলা তুলে নিতে এবং মীমাংসা করতে বিভিন্ন কৌশল ও চাপ প্রয়োগ করা হয়।

সুমন গার্ডের দুলাভাই ওয়ালী খান বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী (পাকশি) কল্যাণ পরিদর্শক কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন, সেই দাপটেই ডিউটি চলাকালীন সময় মদপানসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত থাকেন, এস এম গ্রেড ৩ সুখান পুকুর স্টেশন মাস্টার অতিরিক্ত দায়িত্বে ভারপ্রাপ্ত (এসএস) দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন এবিএম জিয়াউর রহমানকে ধর্ষণ ঘটনাটি মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য অলিখিত দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

জিয়াউর রহমান, স্থানীয় বিপথগামীদের সাথে নিয়ে মীমাংসা করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।শুধু তাই নয় সুমন গার্ডের দুলাভাই ওয়ালী খান পরপর দুই বার দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে এসে মীমাংসার জন্য জিয়াউর রহমানসহ অন্যান্যদের সাথে আলোচনা করে গেছেন বলে জানা গেছে, ধর্ষণ ঘটনায় দিনাজপুর রেলপাড়ায় চলছে তুমুল আলোচনা গুঞ্জন চলছে সর্বত্র।

IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম : দিনাজপুর।