ওষুধের দাম বেশি চাওয়ার প্রতিবাদ করায় স্বামী-স্ত্রীকে পেটাল ফার্মেসীর মালিক-কর্মচারীরা
আপডেটঃ ১২:০০ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ১১, ২০২২
নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:-রাজশাহী মহানগরীতে ওষুধের দাম বেশি চাওয়ার প্রতিবাদ করায় অশ্লীল গালি দিয়ে স্বামী-স্ত্রীসহ আরো ৩ জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী মহানগরীর এক ফার্মেসীর মালিক ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।১০ এপ্রিল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর লক্ষীপুর মোড়স্থ আস্থা ফার্মেসীতে এ ঘটনা ঘটে।এ ঘটনায় আহতরা হলেন, নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন উপশহর এলাকার লকিয়তুল্লাহ খানের ছেলে আলতাফ হোসেন খান (৩০), তার স্ত্রী পিয়তি বেগম (২৪), শ্যালক নগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন শিরোইল কলোনী এলাকার সাকাবল আলীর ছেলে সৌরভ (১৯) এবং তার মা সাংবাদিক আফরোজা খান হেলেন (৫০)।তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।সাংবাদিক আফরোজা খান হেলেন জানান, রোববার বিকেলে তার ছেলে আলতাফ ও ছেলের বউ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা শেষে প্রেসিক্রিপসন নিয়ে লক্ষীপুর মোড়স্থ আস্থা ফার্মেসীতে ওষুধ কিনতে যান।
এ সময় ফার্মেসীর মালিক বাবু প্রেসক্রিপসন দেখে ওষুধের দাম ১ হাজার ১০০ টাকা লাগবে বলে জানান।তখন তার ছেলে আলতাফ ফার্মেসীর মালিককে জানান, এ ওষুধ এর আগে তিনি ৯০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন।তাই অন্য দোকান দেখে ওষুধ কিনবেন বলে পাশের ফার্মেসীতে যান।সেখানে গিয়ে বাবু গালাগালি দেওয়া শুরু করে ও বলে ওষুধ কিনতে আসেনি শুধু ঘুরে বেড়াতে এসেছে।
অন্য ফার্মেসীতে একই ওষুধ আলতাফ ৯০০ টাকা দিয়ে কিনে নেন।এ সময় ফার্মেসীর মালিক বাবু চড়াও হয়ে আরো গালিগালাজ দিতে শুরু করেন।এ সময় তার ছেলে আলতাফ গালি দিতে নিষেধ করলে বাবু আরো অশালীন গালিগালাজ দেওয়া শুরু করে।তার ছেলের বউ পিয়তি স্বামীকে গালিগালাজ দিতে দেখে প্রতিবাদ করলে তাকে অশ্লীল গালি দিয়ে বাবু তাকে থাপ্পড় মারে।
স্ত্রীকে মারতে দেখে তার ছেলে আবার নিষেধ করলে বাবু ও তার কর্মচারীরা ছেলে ও ছেলের বউকে মারধর করে।এতে নিরুপায় হয়ে তার ছেলে শ্যালক ও তাকে ফোনে বিষয়টি জানান।খবর পেয়ে তিনি ও তার ছেলের শ্যালক ঘটনাস্থলে গেলে বাবু ও তার ছেলে আপেলসহ অজ্ঞাত আরো দু’জনকে ডাকে।তারা রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে মারতে আসে।
তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বাবু ও তার ছেলেদের থামতে বললে তারা না থেমে রড দিয়ে মারার চেষ্টা করে।সেই মার থামানোর সময় সাংবাদিক হেলেনের হাতে লাগে।এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার ছেলের শ্যালক ফার্মেসীর মালিকের উপর চড়াও হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে উভয় পক্ষকে থামিয়ে দিয়ে তাদের পুলিশ বক্সে নিয়ে এসে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।
পরে ঘটনাস্থলে ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন, ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু ও ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম মাহবুবুল হক পাভেল যান।আফরোজা খান হেলেন আরো বলেন, ওষুধের দাম বেশি চাওয়ায় ফার্মেসীর মালিক ছেলে ও ছেলের বউকে মারধর করেছে।এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, লক্ষীপুর বক্সের ইনচার্জ আজাদ সাহেব কাটছাঁট করা ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে আমার ছেলের দোষ দিচ্ছে।তিনি পক্ষপাতিত্ব করছেন।আমি ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।ফার্মেসীর মালিকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে লক্ষীপুর পুলিশ বক্সের ইনচার্জ টিএসআই আজাদ বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলামনা।ভিডিও ফুটেজ দেখে ওষুধ কেনা পক্ষের ভুল বলে মনে হচ্ছে।পুরো ফুটেজ দেখলে ঘটনাটা জানা যাবে।ব্যস্ত থাকায় সেটা দেখা সম্ভব হয়নি।তারা চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।স্থানীয়রা জানান, নগরীর এই এলাকার ফার্মেসি গুলোর নিকট ঔষধ ক্রেতারা জিম্মি।
ইচ্ছেমত ঔষধের দাম নেন তারা।কেও এর প্রতিবাদ বা অন্য দোকানে গেলে তাকে মানসিক হয়রানি সহ শাররিক নির্যাতন করা হয়।অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বক্সের পুলিশ ফার্মেসিগুলো থেকে মাসিক মাসোহারা নিয়ে থাকেন।এর ফলে তাদের পক্ষেই সাফাই গান।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।