সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

এবার রামেকে রোগীর স্বজনকে প্রধান-মন্ত্রীর কাছে কমোড চাইতে বললেন দায়িত্বরত নার্স!

আপডেটঃ ৮:০৮ অপরাহ্ণ | জুন ২৭, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:- দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্সরা (সেবিকা)।হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে এসব নার্সদের অসৌজন্যমূলক আচরণ, হুমকি-ধামকি আর গালাগাল যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।এবার রামেক হাসপাতালের দুই নম্বর ওয়ার্ডে (পুরুষ) নাসিমা খাতুন নামের দায়িত্বরত এক নার্স চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনের প্রশ্নের উত্তরে উত্তেজিত হয়ে বললেন ‘শেখ হাসিনার কাছে কমোড চেয়ার পাওয়া যাবে, হাসিনার সাথে যোগাযোগ করেন।আজ সোমবার (২৭ জুন) সকালে রামেক হাসপাতালের দুই নম্বর ওয়ার্ডে নাজমুল ইসলাম নামের রোগীর ছেলে নওগাঁ সরকারি বিএমসি মহিলা কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রভাষক (বিসিএস ৩৫ তম ব্যাচ) মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে এমন কটুক্তি করেন।

এর আগে গত শনিবার (২৫ জুন) রাতে নাজমা খাতুন নামের এক নার্স ওই শিক্ষকের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।পরে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী ঘটনাস্থলে গিয়ে এই নার্সকে নিবৃত করেন।ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গত ২১ জন নওগাঁর প্রাইম ল্যাবে বাবার হার্নিয়ার অপারেশন করা হয়।

অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হলে গত শুক্রবার (২৪ জুন) ওই ল্যাব থেকে বাবাকে রিলিজ দেয়া হয়।কিন্তু হঠাৎ করে গত শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে বাবা অজ্ঞান হয়ে পড়ে।এমন অবস্থায় প্রথমে নওগাঁ সরকারি হাসপাতালে পরে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ওইদিন সন্ধ্যার দিকে বাবাকে রামেক হাসপাতালে দুই নম্বর (পুরুষ) ওয়ার্ডে পেইন বেডে (১ নম্বর বেড) ভর্তি করাই।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাবার জ্ঞান তখনও ফিরেনি।স্বাভাবিকভাবেই বাবার এমন খারাপ অবস্থা দেখে আমি বিমর্ষ ছিলাম।তখন হঠাৎ কয়েকজন নার্স এসে রোগীর স্বজনদের বাইরে যেতে বলেন।কিন্তু আমি বাবার বিমর্ষ অবস্থার কথা চিন্তা করায় নার্সদের কথা শুনতে পাইনি।তখন নাজমা খাতুন নামে এক নার্স আমাকে উদ্দেশ্য করে চরম গালাগাল দেয় এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করে।

বিষয়টি রামেক হাসপাতালের পরিচালককে অবহিত করা হলে তিনি এসে ওই নার্সকে বিবৃত করেন।এতো গেল ওই দিনের ঘটনা।নিয়ার অপারেশনের কারণে আমার বাবার ইউরিন ক্যাথেটার পড়ানো ছিল।সোমবার (২৭ জুন) সকালে হঠাৎ বাবার টয়লেটের চাপ আসে।ইউরিন ক্যাথেডাল পড়ানো থাকায় তাকে স্বাভাবিক টয়লেটে নিয়ে যেতে পারছিলাম না।

তখন ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নাসিমা খাতুন নামের এক সিনিয়র স্টাফ নার্সের নিকট আমি সবিনয়ে জানতে চাইলাম-হাসপাতলে কি কোন কমোড চেয়ারের ব্যবস্থা আছে ? প্রতি উত্তরে তিনি অত্যন্ত রাগান্বিত হয়ে আমাকে বললেন ‘কমোড চেয়ার শেখ হাসিনার কাছে পাওয়া যাবে, শেখ হাসিনার সাথে যোগাযোগ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাই কমোড পাওয়া যাবে এমন কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলাম।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন কটুক্তি করায় আমি ওই নার্সের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার দাবি করছি।প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কটূক্তির কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত রামেক হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসিমা খাতুন বলেন, তিনি আমাকে হাই কমোড সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার আগে আমার এক স্টাফের সাথে রাগারাগি হয়েছিল।

সেই রাগে আমি তাকে কথাটি বলে ফেলেছি।রে অবশ্য আমি তার কাছে এই বিষয়ে ভুল স্বীকার করেছি।জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালে নার্স সুপারিনটেনডেন্ট সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানতাম না।পরিচালক স্যার আমাকে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলেন।বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি।প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যদি সে এমন কথা বলে থাকে তাহলে অবশ্যই এটি গর্বিত কাজ হয়েছে।

তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন কটূক্তি কোনো ভাবেই মেনে নেয়া হবে না।যদি ওই নার্স প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন কটুক্তি করে থাকে তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগে একটি মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব তার বাবার চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে এসেছিলেন।তার সাথেও রামেক হাসপাতালের নার্সরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং ওই উপ-সচিবকে হুমকি-ধামকি দেয়।

IPCS News : Dhaka : আমজাদ হোসেন শিমুল : রাজশাহী।